ঝিনাইদহের শৈলকুপায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে এক জনের ভাই নিহত এবং অপর কাউন্সিলর প্রার্থীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় কাউকে আটকও করতে পারেনি পুলিশ। ভোটের আগে আগে দুই জনের প্রাণহানির ঘটনায় এলাকায় বিরাজ করছে আতঙ্ক।
বুধবার রাত আটটার দিকে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর খান বাবুর সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শওকত আলীর ছোট ভাই লিয়াকত আলী বল্টু।
এর পাঁচ ঘণ্টা পর কুমার নদ থেকে উদ্ধার হয় কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর খান বাবুর মরদেহ। গ্রেপ্তার এড়াতে দুই সঙ্গীকে নিয়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করছিলেন বলে জানিয়েছেন তার সমর্থকরা।
বল্টুর ভাতিজা মশিউজ্জামান বলেন, বুধবার রাত আটটার দিকে তারা যখন ভোটের প্রচার শেষে কবিরপুর মোড়ে ফিরছিলেন, তখন বাবুর সমর্থকরা তাদের ধাওয়া করে। এ সময় লিয়াকত আলী বল্টু রাস্তায় পড়ে গেলে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর ও কুপিয়ে জখম করা হয়। সেখান থেকে প্রথমে তাকে শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মশিউজ্জামান বলেন, পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি, এটি পুলিশের ব্যর্থতা। আমি হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
নদ থেকে উদ্ধার হওয়া আলমগীর খান বাবুর স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইতি বলেন, ‘গতকাল আমার স্বামী যাওয়ার সময় আমাকে বলেছিল মার্ডার হয়ে গেছে, আমি সেভ জোনে যাচ্ছি। তোমরা সাবধানে থেক। এরপর নদ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। যাওয়ার সময় তার সঙ্গে যে দুই জন ছিল তাদের কোনো খোঁজ করতে পারেনি পুলিশ। সে যদি এমনিতে মারা যায় বা তাকে হত্যা করা হয় তা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে বোঝা যাবে।’
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘শৈলকূপার পরিস্থিত খুবই থমথমে। আমরা এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করেছি। ঘটনায় জড়িতদের আটকে অভিযান চলছে।’
কুমার নদ থেকে কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর খান বাবুর মরদেহ উদ্ধার হয়।
এই সংঘর্ষের ঘটনায় আতঙ্ক নিয়ে শহরের কবিরপুর এলাকার ভোটার রমজান বলেন, ‘আমার শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতি চাই। কিন্ত এমন ঘটনা ঘটলে ভোটকেন্দ্রে যাওয়া যাবি না। ভোটের দিন যদি এর চেয়েও বেশি ঘটনা ঘটে তাহলে আমার যাব না।
একই এলাকার ভোটার মাহফুজ উদ্দিন বলেন, ‘ভোটের দিন শান্তিপূর্ণভাবে করতে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান থাকতে হবে। নতুবা এর চেয়ে বড় ঘটনা ঘটতে পারে।’
অবশ্য এক কাউন্সিলর প্রার্থী মারা যাওয়ায় সেখানে এই পদে ভোট হবে না। কেবল মেয়র পদে ভোট দেবে ভোটাররা।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার সাঈদ জানান, ‘পৌরসভা এলাকার পরিস্থিতি থমথমে বিরাজ করছে। পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’