কুষ্টিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মাহবুবুর রহমান পাখিকে ঘিরে এলাকায় মুখরোচক আলোচনা চলছে।
পৌর শহরের ত্রিমোহনী এলাকায় তিনি পাখি ভাই নামেই পরিচিত। নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের সময় তিনি চেয়ে নিয়েছেন উটপাখি।
নিউজবাংলাকে জানান, প্রতীক বরাদ্দ নেয়ার সময়ই মাথায় স্লোগান ছিল ‘পাখি ভাইয়ের মার্কা, উটপাখি মার্কা।’
উটপাখি প্রতীক না পেলে কী চাইতেন?- জানতে চাইলে পাখি বলেন, ‘তাহলে পাঞ্জাবি মার্কা চাইতাম।’
সেটা কেন?
জবাব আসে, ‘যেহেতু আমি নিয়মিত নামাজ আদায়ের চেষ্টা করি, তাই এই মার্কাটি দ্বিতীয় পছন্দ ছিল।’
পাখিরা পাঁচ ভাই। তিনি তাদের মধ্যে চতুর্থ জন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন কাঠের ব্যবসা।
পাখির বাবা এলাকার আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। ছিলেন বারখাদা স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিও। তার বড় ভাই রমজান আলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
পাখির নামকরণের ইতিহাসটাও বেশ মজার। বলেন, ‘জন্মের সময় আমার ওজন ছিল কম। মুরুব্বিরা বলেন, দেখতে পাখির মতো ছোট ছিলাম। এ কারণে আমাকে আদর করে পাখি বলা হতো। পরে নামই হয়ে যায় পাখি।’
ভোটারদের তেল দিয়ে ধরা খেয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী
এ ওয়ার্ডে পাখির প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রবিউল ইসলাম রবি। তার মার্কা নিয়েও এলাকায় ঘটেছে মজার ঘটনা।
রবি পেয়েছেন পানির বোতল মার্কা। তার সমর্থকরা সম্প্রতি ধরা খেয়েছেন ভোটারদের মধ্যে তেলের বোতল বিতরণ করতে গিয়ে।
রোববার রাতে বারখাদা পূর্বপাড়া এলাকায় রবিউলের সমর্থক রিয়াজুল ইসলামকে ভোটারদের মধ্যে তেলের বোতল বিলি করার সময় ধরে ফেলে প্রতিপক্ষের সমর্থকরা। ওই সময় রিয়াজুলের কাছে একটি কাগজের কার্টুনে ২৪০ মিলিলিটারের প্যারাসুট নারকেল তেলের ১৭৪টি বোতল ছিল।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ দলকে এ তথ্য জানানোর পর ঘটনাস্থলে আসেন কুষ্টিয়া সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিফাত উদ্দিন এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবুজ হাসান। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পৌর নির্বাচন আচরণ বিধি অনুযায়ী ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ম্যাজিস্ট্রেট সিফাত উদ্দিন জানান, রিয়াজুল ইসলামকে জরিমানা পরিশোধ করায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
রিয়াজুল জানান, তেলের বোতলগুলো আগেই কিনে রাখা হয়েছে, বিলি করার জন্য না। ভোটে জেতার পর ভোটারদের দেয়া হবে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাহবুবুর রহমান পাখির অভিযোগ, রবিউল ইসলাম তার মার্কার সঙ্গে মিল রেখে এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছে সরিষা, সয়াবিন ও নারকেল তেলের বোতল বিতরণ করে আসছেন। এভাবে তিনি ভোট কিনছেন।
এই ওয়ার্ডে গতবার জিতেছিলেন রবিউল। পাখির মতো তিনিও জেলা আওয়ামী লীগের সমর্থক। তখন বছর তার হয়ে কাজ করেছিলেন পাখি।