শরীয়তপুর পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে প্রচারণা এখন তুঙ্গে। গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীসহ তিন জন। তবে নির্বাচনের মাঠে নেই ধানের শীষের প্রার্থী।
১৪ তারিখ মধ্য রাতে শেষ হচ্ছে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার। এর আগে ভোটারদের মন জয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা।
নির্বাচন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের পারভেজ রহমান জন, বিএনপির লুৎফর রহমান ঢালী, জাতীয় পার্টির শহিদ সরদার এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের তানভির আহম্মেদ বেলাল। তাদের মধ্যে নৌকা প্রতীক ও ধানের শীষের প্রার্থী জেলা জজ আদালতের আইনজীবী।
নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেয়ার অভিযোগ করে বিএনপি প্রার্থী লুৎফর রহমান ঢালী বলেন, ‘আমার কর্মীরা কোনো ওয়ার্ডে প্রচারে যেতে পারছে না। কোনো পোস্টারও টানাতে দেয়া হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই প্রচার চালাচ্ছি না।’
আওয়মী লীগ প্রার্থী পারভেজ রহমান জন (বামে) ও বিএনপি প্রার্থী লুৎফর রহমান ঢালী
দলের প্রার্থীর সুুরে কথা বলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান তালুকদারও। তিনি বলেন, ‘দেশে এখন সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। গণসংযোগে নামলে মামলা, হামলার হুমকি দেয়া হয়। তাই নেতাকর্মীরা আতঙ্কে প্রচার থেকে বিরত।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী পারভেজ রহমান জন। তিনি বলেন, ‘আমি সহিংসতা ও পেশি শক্তির রাজনীতিকে ঘৃণা করি। সুস্থ ধারার রাজনীতি ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠার জন্য পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছি। বিএনপি প্রার্থী কেনো নীরব তা আমার জানা নেই। কাউকেই বাধা দেয়া হচ্ছে না। বিএনপির ভোট নেই, তা বুঝেই মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’
প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী শহিদ সরদার। তিনি বলেন, তার কর্মীরা প্রচার চালানোর সময় এখনও কোনো বাধার মুখোমুখি হননি। গণসংযোগে ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
তবে ভোটারদের মাঝে ভোট দেয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে বলে মনে করেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী তানভীর আহমেদ বেলাল। তিনি বলেন, ভোটাররা কিছুটা আতঙ্কে রয়েছেন। ভোট সুষ্ঠু হলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদীও তিনি।
সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনি প্রচার করছেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী তানভীর আহমেদ বেলাল
পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলামসহ আট জন মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতায় সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবীবুর রহমানের ছেলে পারভেজ রহমানকে মনোনয়ন দেয় দলটি।
তার পক্ষেই এখন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন।
সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারের সময় আমরা ভোটারদের মধ্যে সরকারের নানা উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরেছি। আশা করছি বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পারভেজ রহমান বিজয়ী হবে।’
পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন জানান, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। প্রত্যেক প্রার্থী সুন্দর পরিবেশে প্রচার চালাচ্ছেন। নির্বাচনি আচারণবিধি ভঙ্গ ও বাধা দেয়ার কোনো অভিযোগ নেই।
বিএনপি প্রার্থীর লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা।
শরীয়তপুর পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা ৩৮ হাজার ৭৪৭ জন। নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ৪৫ জন ও সংরক্ষিত আসনে লড়ছেন ১৩ জন প্রার্থী।