ভোটারদেরকে কোনোভাবেই বাধা না দেয়ার বিষয়ে কর্মীদেরকে শপথ পড়িয়েছেন নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা।
সেই সঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে জীবন উৎসর্গ করার ঘোষণাও দিয়েছেন।
আগামী ১৬ জানুয়ারির ভোটের প্রচারে সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়ে নানা কর্মসূচি পালন করে আলোচিত হওয়া এই নেতা সম্পর্কে ওবায়দুল কাদেরের ভাই।
সোমবার বিকালে পৌরসভার চর হাজারী ফজলুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত কর্মী সমাবেশে যোগ দেন তিনি।
কাদের মির্জা সঙ্গে নিয়ে যান একটি লিখিত শপথ বাক্য।
এর আগে পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কর্মী সমাবেশেও তিনি শপথ পাঠ করান।
লিখিত শপথ বাক্যে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার মেয়র পদপ্রার্থী জনাব আবদুল কাদের মির্জাকে আগামী ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ নির্বাচনে বিজয় করার লক্ষ্যে আমি একজন কর্মী হিসেবে, আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব সততা-নিষ্ঠা-ইমানি দায়িত্ব পালন করিব।
‘কোনো প্রকার ভোট জালিয়াতির আশ্রয় নেব না। বল প্রয়োগের মাধ্যমে কোনো ভোটারকে তার ভোটাধিকার হরণ করা থেকে বিরত থাকব।
‘ভোটের দিন ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত প্রতিটি ভোটকে জীবন বাজি রেখে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করব এবং নিজ দায়িত্ব থেকে কোনো ক্রমেই বিচ্যুত হইব না।
‘দলীয় নির্দেশনা মোতাবেক, নেতৃবৃন্দের পরামর্শ ব্যতিরেকে এমন কোনো কর্মে লিপ্ত হইব না, যাতে দল-নৌকা মার্কার প্রার্থীর ক্ষতি হয়। এই নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করে জয়ী হবার জন্য আমরা জীবন উৎসর্গ করার ঘোষণা দিলাম। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন, আমিন।’
- আরও পড়ুন: আবার ‘বোমা ফাটালেন’ কাদেরের ভাই
কাদের মির্জা গত তিন বার ধরে বসুরহাটের মেয়র। আবারও তাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
সম্প্রতি তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে কোম্পানীগঞ্চে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আলোচনায় আসেন। সেদিন তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বৃহত্তর নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের এমপিদের তিন/চার জন ছাড়া বাকিরা ঘর থেকে বের হতে পারবেন না।
- আরও পড়ুন: কাদেরের ভাই বলে প্রচার বেশি: হাছান
এমপিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী লালন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিরুদ্ধে নিয়োগের বিনিময়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগও আনেন।
কাদেরের ভাইয়ের এই বক্তব্য লুফে নিয়ে বিএনপি বলেছে, জনগণ ভোট দিতে পারে না বলে তারা যে অভিযোগ করছেন, সেটি এখন সত্য প্রমাণ হচ্ছে।
কাদের মির্জা এই অভিযোগ করার পর থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদেরকে বারবার ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে। তারা বলছেন, দলের ভেতর ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ আছে। এটা তারই প্রমাণ।
শপথ পড়ানোর অনুষ্ঠানে নোয়াখালী সদরে ওই আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর নৌকায় ভোট চাওয়া নিয়েও কথা বলেন কাদের মির্জা।
- আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ে মুগ্ধ রিজভী
তিনি আন্দোলনে নেমে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন, তাদের মধ্যে একরামুল করিম চৌধুরীও আছেন।
কাদের মির্জা বলেন, ‘ভোটে আমার অবস্থা ভালো, এ কথা শুনে তিনি আমার পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। এটি তাদের অন্য কৌশল। ভোটের মাঠের অবস্থা খারাপ হলে তা চাইতেন না।’
- আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের উল্টো সুর
তার নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে ওবায়দুল কাদেরের ভাই বলেন, ‘আমি জাতীয়ভাবে কোনো অনিয়মের কথা বলিনি। আমি বলেছি নোয়াখালীর অপরাজনীতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা। কিন্তু কিছু মিডিয়া তা এডিট করে প্রচার করছে। আর স্বার্থবাজরা তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কান ভারী করার চেষ্টা করছে।’
- আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে কাদেরের ভাই কেন আন্দোলনে
তিনি বলেন, ‘আমি কোথায়ও বলেছি শেখ হাসিনা প্রহসনের নির্বাচন করেছেন? কিন্তু এটি অপব্যাখা দিচ্ছে কেউ কেউ। আমি সব সময় বলে আসছি ২০০৮ ও ১৯৯৬ সালে এদেশে অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন হয়েছে। আর বিএনপি, জিয়াউর রহমানের আমল থেকে ভোট কারচুপি শুরু করেছে।’
কাদের মির্জা বলেন, ‘আমার সঙ্গে ওবায়দুল কাদের নেই, জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ নেই, ডিসি-এসপি নেই, নির্বাচন কর্মকর্তা নেই। আমার সঙ্গে আছে শুধু জনগণ।