জাপানি দুই শিশুকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারেই রাখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
৩১ আগস্ট পর্যন্ত তাদের সেখানে রাখতে হবে। এ সময় সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বাবা দেখা করতে পারবেন। আর বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মা দেখা করতে পারবেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে হাইকোর্ট এ আদেশ দেয়।
বাবার পক্ষের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুই সন্তানের জিম্মা নিয়ে বিরোধ
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাবেক স্বামী শরীফ ইমরানের কাছ থেকে নিজের দুই সন্তানকে ফিরে পেতে জাপানি নাগরিক ডা. নাকানো এরিকোর রিটের শুনানি শেষে দুই সন্তানকে ৩১ আগস্ট হাজির করতে গত বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
পাশাপাশি জাপানি আইন ভঙ্গ করে সন্তান নিয়ে আসা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে আদালত।
রিটে দুই শিশুকে তাদের মা এরিকোর জিম্মায় দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানের নাগরিক এরিকো ও বাংলাদেশি আমেরিকান শরীফ ইমরান জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিন মেয়েসন্তানের জন্ম দেন এরিকো। তারা হলো জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা।
এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক। মালিকা, লিনা ও হেনা টোকিওর চফো সিটিতে আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসআইজে) শিক্ষার্থী ছিল।
চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরান বিবাহবিচ্ছেদের (ডিভোর্স) আবেদন করেন। ২১ জানুয়ারি ইমরান এএসআইজে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন।
স্কুল কর্তৃপক্ষ এরিকোর সম্মতি না থাকায় তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরে ইমরান তার মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।
২৫ জানুয়ারি ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে তার সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন।
গত ২৮ জানুয়ারি এরিকো টোকিওর পারিবারিক আদালতে তার সন্তানদের জিম্মার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি শিশুদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সাক্ষাতের আদেশ দেয়। ইমরান আদালতের আদেশ ভঙ্গ করে মাত্র একবার মায়ের সঙ্গে দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন।
এরিকোর অভিযোগ, গত ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন এবং গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট নেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইমরান তার দুই মেয়ে জেসমিন ও লাইলাকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।