প্রায় দুই মাসের যাত্রা শেষে ডিপোতে স্থান পাচ্ছে মেট্রো রেলের তৃতীয় ও চতুর্থ সেট ট্রেন। বৃহস্পতিবার সকালে উত্তরার অস্থায়ী জেটি থেকে ট্রেনের বগিগুলো স্থানান্তর কাজ শুরু হয়।
প্রতি সেট ট্রেনে চারটি বগি ও দুইটি ইঞ্জিন রয়েছে। ২০০ টন ধারণ ক্ষমতার ক্রেনের সাহায্যে এক একটি বগি বার্জ থেকে ট্রেইলারে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
ট্রেইলারে করে সেগুলো দিয়াবাড়িতে ডিপোতে নেয়া এবং ট্রেইলার থেকে ডিপোতে আনলোড বা স্থানান্তর করতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগে বলে জানান কর্মকর্তারা।
ট্রেন সেট দুটি গত ২২ জুন জাপানের কোবে সমুদ্রবন্দর থেকে জাহাজে বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। ২০ জুলাই তা বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দরে পৌঁছায়।
সেখান থেকে গত ১২ আগস্ট চারটি বার্জে করে দুই সেট ট্রেন ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। এগুলো বিভিন্ন নদীপথ অতিক্রম করে তুরাগ নদী হয়ে প্রকল্প এলাকার কাছে জেটিতে পৌঁছে বুধবার। এ নিয়ে মোট চার সেট ট্রেন দেশে পৌঁছেছে।
মেট্রো রেলের পরিচালন সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র জানায়, মেট্রো রেলের তৃতীয় ও চতুর্থ সেট ট্রেনের মধ্যে একটি দুপুর ১টায় এবং অপরটি সন্ধ্যা ৬টার দিকে ডিপো সংলগ্ন তুরাগ নদীর তীরে স্থাপিত অস্থায়ী জেটিতে পৌঁছে।
ডিপোতে স্থানান্তরের পর মেকানিক্যাল-ইলেকট্রিক্যাল, ওয়াশিংসহ প্রতিটি কোচকে ১৯ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এ জন্য ইতালি থেকে বিশেষ ধরনের যন্ত্র আনা হয়েছে।
প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রেন সেটের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনও চলছে।
মেট্রোরেলের প্রতিটি বগি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত থাকবে। বগির দুপাশে চারটি করে দরজা। স্টেইনলেস স্টিল বডির ট্রেনগুলোতে লম্বালম্বিভাবে যাত্রীদের জন্য আসন রয়েছে। দাঁড়ানোর জন্য রয়েছে হাতলের ব্যবস্থা। প্রতিটি ট্রেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা ১ হাজার ৭৩৮ জন।
জেটিতে কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবারের মধ্যে তারা এক সেট ট্রেন ডিপোতে স্থানান্তরের লক্ষ্য নিয়েছেন।
দেশের প্রথম মেট্রোরেল রুট এমআরটি-৬ চালু হবে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত। সব মিলিয়ে এ রুটে চলাচলের জন্য জাপান থেকে আনা হবে ২৪ সেট ট্রেন। এতে মোট ব্যয় হবে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ট্রেনগুলোয় ডিসি ১৫০০ ভোল্টের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা থাকবে।
মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যবস্থাপক এ বি এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘আজকের টার্গেট হচ্ছে প্রথম যে ছয়টি কোচ সেগুলো আনলোড করে নিরাপত্তার সঙ্গে নিয়ে যাব। আর আগামীকাল আর যে ছয়টি কোচ আছে সেগুলো আনলোড করব। তারপর আমাদের ঠিকাদারদের যে চেকিং আছে, সেই চেকিং শেষ হবে। তারপরে আমরা স্ট্যাটিক টেস্ট করব, ডায়নামিক টেস্ট করব। নিয়মিত ক্রমান্বয়ে আমরা বিভিন্ন টেস্ট করব।
‘এরপর আমাদের পঞ্চম যে ট্রেন সেটটি আছে সেটিও জাপানে রেডি আছে। ২৫ আগস্ট সেটি বাংলাদেশে রওনা দেবে। এ পর্যন্ত আটটি ট্রেন আমাদের রেডি আছে।…সেগুলোর কাজ সম্পন্ন হলে আমরা ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে নিয়ে আসব।’