বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘বারবার রিমান্ড দিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করে দেবেন না’

  •    
  • ১৯ আগস্ট, ২০২১ ১৬:২০

পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, ‘পরীমনি একজন চলচ্চিত্র নায়িকা, অনেক কষ্ট করে তিনি ক্যারিয়ার তৈরি করেছেন। তাকে এভাবে বারবার রিমান্ডে নিয়ে মানসিক শক্তি শেষ করে দেয়া হচ্ছে। তাকে এভাবে রিমান্ড দিয়ে দিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করে দেবেন না। দয়া করে রিমান্ড বাতিল করে জামিন দিন।’

পরীমনি অনেক কষ্ট করে চলচ্চিত্র শিল্পে তার ক্যারিয়ার তৈরি করেছেন। বারবার রিমান্ডে নিয়ে তার মানসিক শক্তি শেষ করে দেয়া হচ্ছে।

এমন কারণ দেখিয়ে রিমান্ড আবেদন বাতিল করে পরীমনির ক্যারিয়ার শেষ না করার আবেদন জানিয়েছেন তার আইনজীবী মজিবুর রহমান।

বৃহস্পতিবার পরীমনির রিমান্ড শুনানিতে তিনি এ আবেদন জানান।

মজিবুর রহমান বলেন, ‘পরীমনি একজন চলচ্চিত্র নায়িকা, অনেক কষ্ট করে তিনি ক্যারিয়ার তৈরি করেছেন। তাকে এভাবে বারবার রিমান্ডে নিয়ে মানসিক শক্তি শেষ করে দেয়া হচ্ছে। তাকে এভাবে রিমান্ড দিয়ে দিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করে দেবেন না। দয়া করে রিমান্ড বাতিল করে জামিন দিন।’

তবে তার এই আবেদন নাকচ করে ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনিকে আবারও এক দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। বনানী থানায় করা মাদক মামলায় তাকে তৃতীয় দফায় হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাবাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম ২৬ মিনিটের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

এর আগে ১৬ আগস্ট পরীমনির পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা। আদালত পরীমনির উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন‌্য বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেন।

এদিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে পরীমনিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।

বেলা ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে রিমান্ড ও জামিন শুনানির জন্য পরীমনিকে এজলাসে তোলা হয়। লোকের ভিড়ে আদালতে এ সময় দাঁড়ানোর জায়গাও ছিল না।

পরে পরীমনি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছাড়া অন্যদের আদালত থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন বিচারক আতিকুল ইসলাম।

অনেকেই থেকে যাওয়ায় তিনি বলেন, ‘ওনাকে যারা দেখতে এসেছেন, তাদের দেখা শেষ হয়েছে। এবার চলে যান।’

এতেও কোনো সাড়া না মিললে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবুর আবেদনে বিচারক অন্য মামলার শুনানি শুরু করেন।

পরে ১১টা ৪৫ মিনিটে পরীমনির মামলার শুনানি শুরু হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড অনুমোদনের আবেদন জানান।

শুনানিতে তিনি বলেন, ‘পরীমনির কাছে বিদেশি মদ, এলএসডি, দশ গ্রাম আইস, ব্রট পাওয়া গেছে। তাই তাকে তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাজী গোলাম মোস্তফা আদালতকে বলেন, ‘আসামিকে এর আগে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার কাছে থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে, সেসব তথ্যসূত্র বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কারা মাদক ব্যবসায়ী ও কারা এসব আমদানি করে এ বিষয়ে মামলার তদন্তের স্বার্থে জানা প্রয়োজন।’

রিমান্ড বাতিল চেয়ে পরীমনির পক্ষে জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান।

শুনানিতে তিনি বলেন, ‘এই মামলাটি একটি মাদকের মামলা। এখানে বলা হয়েছে ১০ গ্রাম আইস উদ্ধার করা হয়েছে। এলএসডি কী পরিমাণে সেটি বলা নাই। তাকে দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে কী জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো?

‘তিনি কি আন্তর্জাতিক চোরাচালানের অভিযোগে অপরাধী? তিনি কি মাদক চোরাচালান করেন? তাকে বিভিন্নভাবে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, এরপর আর জিজ্ঞাসাবাদ করার কী থাকতে পারে?’

আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, ‘তাকে এইভাবে হয়রানি করায় সমাজের কাছে কী মেসেজ যাচ্ছে? তিনি একজন চলচ্চিত্র নায়িকা, দশটি ছবিতে তার কন্ট্রাক্ট রয়েছে। তার মুক্তি না হওয়ায় এসব ছবির শুটিং করা যাচ্ছে না। সহশিল্পী, কলাকুশলী, বিনিয়োগকারী এরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আপনি জানেন অগ্নিযুগের বিপ্লবী ও নারীদের আইকন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের ভূমিকায় অভিনয় করার কথা পরীমনির। সরকারি অনুদানের ছবি এটা, তাকে জামিনে মুক্তি না দিলে এই ছবির শুটিং করা যাচ্ছে না।’

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু আসামিপক্ষের আইনজীবী মজিবুর রহমানকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এত লম্বা কাহিনি বলে আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না।’

পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান তখন আদালতকে বলেন, ‘মাদক আইনের মামলায় যেসব ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তাতে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত শাস্তির বিধান রয়েছে, অথচ এই মামলায় তৃতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদ করার কি কোনো কারণ আছে? হয়তোবা এর পেছনে কোনো কারণ থাকলেও থাকতে পারে।’

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আতিকুল ইসলাম পরীমনির জামিন নাকচ করে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে তিন দিনের মধ্যে এই এক দিনের রিমান্ড আদেশ শেষ করারও আদেশ দেন বিচারক।

৪ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। সংস্থাটি জানিয়েছে, অভিযানে তার বাসা থেকে বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিপুল পরিমাণ দামি মদ, মদের বোতলসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়।

৫ আগস্ট চার দিন এবং ১০ আগস্ট পরীমনির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। ১৩ আগস্ট রিমান্ড শেষে তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।

এ বিভাগের আরো খবর