সমাজের সব শ্রেণি পেশার মানুষকে ঐকবদ্ধ্য করে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে ডেঙ্গু নির্মূল করতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
তার মতে, জনসম্পৃক্ততাই ডেঙ্গু মোকাবেলার উত্তম উপায়। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধ সহজ হবে না বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশনের নগরভবনে আয়োজিত ‘সুস্থতার জন্য সামাজিক আন্দোলন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মন্ত্রী, মেয়র, কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে ঢাকাকে মশামুক্ত করে জনজীবনে স্বস্তি এনে দেয়া সম্ভব নয়। জনগণের অংগ্রহণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা যেমন সিটি করপোরেশনের মৌলিক দায়িত্ব তেমনি নাগরিকদেরও নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব অবহেলা না করে সুনাগরিকের ভুমিকা পালন করতে হবে।’
এডিস মশা কীভাবে এবং কোথায় জন্ম নেয়- এসব বিষয়ে নগরবাসীকে বিভিন্নভাবে সচেতন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ যদি সচেতন হয়ে এই বিষয়গুলোতে নজর দেয় তাহলে এডিস মশা নির্মূল করা সম্ভব না হলেও নিয়ন্ত্রণ করে সহনীয় পর্যায়ে আনা অসম্ভব নয়।’
নির্মাণাধীন বাসাবাড়িতে এডিস মশার প্রজনন বেশি হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, বাসাবাড়ির ছাদে, বেজমেন্টে অথবা ফুলের টবে জমানো স্বচ্ছ পানি নিয়মিত পরিস্কার করতে বা ফেলে দিতে না পারলে সেখানে লার্ভিসাইড অথবা কেরোসিন তেল ঢেলে বা স্প্রে করে এডিস মশার লার্ভা নষ্ট করতে হবে।
সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশের ডেঙ্গুর পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর মশার প্রভাব বেশি—একথা সত্য। কিন্তু আমরা কেউ বসে নেই, সবাই সর্বাত্মকভাবে যার যার অবস্থান থেকে নিরলসভাবে কাজ করছি।’
গত বছর শুধু জলবায়ুর প্রভাবে ডেঙ্গু কম ছিল বলে যে কথা প্রচলিত, সেটা সত্য নয় বলে মনে করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর, নগরবাসী সবার সমন্বিত উদ্যোগ ছিল বলেই সম্ভব হয়েছে। এবারও আমরা সফল হবো।’
পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ যারা ডেঙ্গু মোকাবেলায় সফল হয়েছে তাদের অভিজ্ঞতা নিয়েও কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সেখানে প্রচুর এডিসের লার্ভা প্রজনন হচ্ছে। এ ছাড়া, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও এডিস মশার প্রজনন হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ উদ্যোগে এসব স্থাপনায় মশক নিধন অভিযান চালানোর নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, ‘মশা মারতে গিয়ে এমন কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না যার জন্য পরিবেশ ও মানুষের ক্ষতি হয়। সেদিকেও নজর রাখতে হবে।’
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, সিভিল এভিয়েশন এবং রেলওয়েসহ অন্যান্য সরকারি আবাসন ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে সিটি করপোরেশন সঙ্গে সমন্বয় করে অথবা নিজেদেরকে মশা নিধনের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
এডিস মশা নিধনে একটি ‘ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট’ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী সারাদেশে কাজ শুরু হবে বলেও জানান মন্ত্রী।