বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দুস্থদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ কমিটি। তবে এসব সামগ্রী বিতরণ শুরু হওয়ার পর পরই শুরু হয় বিশৃঙ্খলা।
ত্রাণ নিতে জড়ো হওয়া দুস্থদের অনেকেই বিতরণ স্থল থেকে কেড়ে নিয়ে যায় খাদ্য সামগ্রী। এতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন সংগঠনটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলওয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা। ফলে পণ্ড হয় বিতরণ কার্যক্রম। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জাদুঘরের সামনে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে খাদ্যসামগ্রী এবং মানবিক সহায়তা দেয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়। ১টার দিকে শুরু হয় খাবার বিতরণ কার্যক্রম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
তবে খাবার স্বল্পতায় বাদ পড়ে যায় অনেকেই। দীর্ঘক্ষণ রোদের মধ্যে বসেও খাবার না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন দুস্থরা।
আধাঘণ্টা রোদের মধ্যে বসেও খাবার পায়নি ভাসমান নারী রহিমা বেগম। মঞ্চে থাকা এক স্বেচ্ছাসেবককে তিনি বিষয়টি জানান। তবে স্বেচ্ছাসেবক রহিমা বেগম মিথ্যা কথা বলছেন বলে তাড়িয়ে দেন। ক্ষোভ নিয়ে রহিমা বেগম বলেন, ‘খাবার দিবেন না বললেই ত হয়। আমারে মিথ্যাবাদী বানায় কেন।’ এটা বলেই কাঁদতে কাঁদতে চলে যান রহিমা বেগম।
এ বিষয়ে বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের যতটুকু আয়োজন ছিল ততটুকু আমরা দিয়েছি। আমাদের খাদ্যসামগ্রী লিমিটেড। অনেকে দুইবার করেও নিয়েছে। লাইনে দাঁড়িয়েছে অথচ খাবার পায়নি এরকম কেউ নেই।’
পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে সহায়তা কার্যক্রমের দ্বিতীয় অংশ হিসেবে দুপুর দেড়টায় চাল ডাল বিতরণ কর্মসূচি শুরু করা হয়। বিতরণের শুরুতে কিছুটা শৃঙ্খলা থাকলেও কিছুক্ষণ পরই ফের শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। লাইন থেকে উঠে মঞ্চের দিকে ছুটতে থাকে সবাই। বিতরণ স্থল থেকে কেড়ে নেয় এসব সামগ্রী।
হুড়োহুড়িতে কয়েকজন মাটিতেও পড়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে বিতরণস্থল ত্যাগ করেন দেলওয়ার হোসেনসহ এসব সামগ্রী বিতরণে নিয়োজিত ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবকরা।
শুরুতে খাবার না পাওয়া রিকশাচালক আলী হোসেনও চাল ডালের প্যাকেট নিতে ছুটে যান মঞ্চের দিকে। কাড়াকাড়ি করে তিনি খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ফিরেছেন। মুখে স্বস্তির হাসি।
লাইন থেকে উঠে কেনো ছুটে গিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গেসি বলেই পাইসি। ভালো মানুষের মতো বসে থাকলে এটাও কপালে জুটতো না। এর আগের খাওয়া দিল তখন সুন্দরভাবেই লাইনে বসে ছিলাম। কিন্তু খাবার পাইনি। আজকাল ভালো মানুষের দাম নেই।’