রাজধানীর চকবাজারে ভ্যানের নিচে ফেলে জয় নামের কিশোরকে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জয় নামে ওই কিশোরের বাবার দাবি, এই হত্যাকে আড়াল করতে নিহত জয়ের নামে ছিনতাইয়ের মামলা দেওয়া হয়।
প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে জয়ের পরিবার।
শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নিহতের বাবা সামসুদ্দিন জুম্মন।
সংবাদ সম্মেলনে সামসুদ্দিন জুম্মন জানান, থানা পুলিশের সোর্স চোট্টা রিয়াজ ও তার সহযোগী রাব্বি এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা করে। তাদের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা না করায় চোট্টা রিয়াজের সঙ্গে জয়ের শত্রুতার সৃষ্টি হয়।
গত ৭ আগস্ট রাত ৮টা ৪০ মিনিটে উর্দু রোডের জনতা ব্যাংকের সামনের রাস্তা দিয়ে জয় যাওয়ার সময় ওত পেতে থাকা চোট্টা রিয়াজ, রাব্বিসহ আরও ৫/৬ জন সন্ত্রাসী। জয়ের পথরোধ করে অতর্কিতে তার গলা চেপে ধরে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে চলন্ত কাভার্ড ভ্যানের নিচে জয়কে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। ঘটনাস্থলেই জয়ের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, নির্যাতন করার দৃশ্য দূর থেকে দেখে মো. হাসিব হোসেন আকিব নামের এক তরুণ জয়কে রক্ষা করতে দৌড়ে এসে রাস্তা থেকে তাকে টেনে তোলার চেষ্টা করে। এ সময় হত্যাকারীরা তাকেও মারধর করে। পরবর্তী সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন চকবাজার থানার এসআই রেজাউলসহ কয়েকজন। এসআই আনোয়ার রক্তাক্ত অবস্থায় জয়ের নিথর দেহটি হাসাপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করতে চকবাজার থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে হত্যাকারী চোট্টা রিয়াজ দণ্ডবিধির ৩৯৫/৩৯৭ ধারায় একটি মিথ্যা ছিনতাই মামলা করেন। মামলায় নিহত জয় ও তাকে রক্ষা করতে আসা আকিবসহ আরও কয়েকজন কিশোরকে আসামি করা হয় বলে জানান তিনি।
জয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে করা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও লালবাগ বিভাগের উপকমিশনারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
তবে ঘটনার রাতে চকবাজার থানায় দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন হাওলাদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চকবাজারের উর্দু রোড এলাকায় রিয়াজ উদ্দিন নামের এক নিরাপত্তারক্ষী গতকাল রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়িতে ফেরার সময় তিনি তার বেতনের ১০ হাজার টাকা ও নিজের কাছে থাকা ২ হাজার টাকা গুনে পৃথক করে রাখছিলেন।
‘এ সময় ছয় থেকে সাতজনের একটি দল তাকে ঘিরে ধরে। তার কাছে থাকা টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয় তারা। এক পর্যায়ে তিনি চিৎকার করলে ছিনতাইকারীরা পালানোর চেষ্টা করে। পালানোর সময় জয় নামের যুবকটি কাভার্ড ভ্যানের নিচে চাপা পড়ে মারা যায়।’
কবির হোসেন আরও জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এ ছাড়া নিহত জয়ের নামে থানায় আগে থেকেই মামলা ছিল। ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।