তালেবানের হয়ে যুদ্ধ করতে কিছু বাংলাদেশি বিভিন্ন পন্থায় আফগানিস্তান যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে নিরাপত্তা বিষয়ক ব্রিফিংয়ে শনিবার এ কথা জানান তিনি।
এ সময়, ১৫ আগস্টে যেকোনো ধরনের জঙ্গি হামলা প্রতিরোধে প্রস্তুতির কথা জানান ডিএমপি কমিশনার।
সে জন্য জঙ্গি তৎপরতা রুখতে সাইবার তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে বলেও তুলে ধরেন শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, জঙ্গিদের নজরদারির জন্য সাইবার তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। এখন সারা পৃথিবীর সাইবার ওয়ার্ল্ডের মধ্যে বন্দি হয়ে গেছে। জঙ্গিরাও সাইবার মিডিয়ামগুলো ব্যবহার করে তাদের রিক্রুটমেন্ট করার চেষ্টা করছে।
‘সাম্প্রতিক সময়ে আমরা যে প্রবণতাগুলো দেখছি তা হলো, আফগানিস্তানের যাওয়ার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে, তালেবানদের পক্ষ থেকে।’
জাতীয় শোক দিবস ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশ থেকে তালেবানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য অলরেডি কিছু মানুষ হিজরত করেছে। আমরা ধারণা করছি, কিছু মানুষ ইন্ডিয়ায় ধরা পড়েছে। আর কিছু মানুষ হেঁটে বা অন্য উপায়ে আফগানিস্তানের পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু আমরা না, সাইবার ওয়ার্ল্ডে বিভিন্ন সংস্থা তাদের মনিটর করার চেষ্টা করছে। যখনই সন্দেহভাজন কিছু পাওয়া যায়, আমাদেরকে জানানো হয়। যত গোয়েন্দা সংস্থা আছে সবাই তৎপর আছে।’
আফগানিস্তানের ৩৪ প্রদেশের মধ্যে ১৫টির ক্ষমতা দখল করেছে তালেবান। মে মাসে দেশটিতে ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল দখল করতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায় তালেবান অস্ত্রধারীরা।
যারা তালেবানের ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ করতে আফগানিস্তানে যাচ্ছে তারা দেশেও ছোট ছোট ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে দাবি করেন ডিএমপি কমিশনার।
শফিকুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিরা থেমে নেই। বাংলাদেশে যাতে আর একটিও জঙ্গি হামলার ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘গত পরশুদিন আমরা জঙ্গি সংগঠনের একজন লিডিং সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি। তিনি বোমা বিশেষজ্ঞ, অনলাইনে তিনি বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিতেন। নারায়ণগঞ্জের যে শক্তিশালী বোমা উদ্ধার হয়েছে সেটাও সরাসরি তার তত্ত্বাবধানে তৈরি করা হয়।
‘এই মাসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জঙ্গি বা নাশকতাকারী গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা যে থেমে নেই এতটুকু বলা যায়, তবে আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে বাংলাদেশ আরেকটি ঘটনাও না ঘটে।’
বর্তমানে তৎপর জঙ্গিরা ছোট ঘটনা ঘটিয়ে বিদেশি মিডিয়ায় আসতে চায়। সে জন্য তারা ১৫ আগস্টের মতো ইভেন্টকে বেছে নিতে পারে। তবে যারা এই তৎপরতা চালাচ্ছিল তাদের পুরো গ্রুপটি ধরা পড়েছে বলে দাবি করেন শফিকুল ইসলাম।