শাটডাউন শিথিলের পর প্রথম দিনে এমনিতে ঢাকার সড়কে যানবাহন ও মানুষের চাপ ছিল বেশি। এর মধ্যে হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টিতে তীব্র আকার নেয় যানজট। অনেক সড়কে বৃষ্টির পানি জমে জলজটের সৃষ্টি হওয়ায় জনসাধারণের ভোগান্তি চরমে পৌঁছে সকাল থেকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দিনের শেষ দিকে ঢাকা ও এর পার্শবর্তী এলাকায় আবারও বৃষ্টিপাত হতে পারে।
সকাল থেকে আবহাওয়া রৌদ্রোজ্জ্বল থাকলেও দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ করেই বৃষ্টি নামে রাজধানীতে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে মূষলধারে বৃষ্টিতেই ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, পল্টন, মালিবাগে দেখা যায় রাস্তার দুই দিকে দীর্ঘ যানজট।
মুষলধারে বৃষ্টিতে থমকে যায় রাজধানীর জনজীবন। পথচারীরা বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেন।
বৃষ্টি কমে যাওয়ার পর রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ও সংস্কারকাজের জন্য বিভিন্ন রাস্তায় গর্ত করে রাখা, একই সঙ্গে নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখায় পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
ফার্মগেটে হঠাৎ করেই শুরু হওয়া বৃষ্টিতে তড়িঘড়ি করে কোনো রকম বাইক পার্ক করে চায়ের দোকানে দাঁড়ান লতিফ হাসান।
সকালে হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি, বৃষ্টির আশঙ্কা আছে দিনের শেষেও। ছবি: নিউজবাংলানিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘দেখলাম রোদ ছিল। ভালোই রোদ। হঠাৎ এমন বৃষ্টি হবে তা তো বুঝি না। এমনি ধরেন বিশ্বরোড থেকে এই পর্যন্ত আইলাম দেড় ঘণ্টায়। কাটাবনে যাব, এমনি লেট হয়ে গেছে। করোনার যে অবস্থা, বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর বাধাইলে বিপদ। সব দিকেই বিপদ।’
কারওয়ান বাজারে এক বাইক আরোহীকে পেছন থেকে ছাতা ধরে দুজনকেই বৃষ্টি থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন।
মালিবাগ মোড়ে ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা বিপ্লব হাওলাদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এমনি আজ সড়কে চাপ বেশি। বৃষ্টিতে এক সাইডে পানি জমে থাকে। পরে ঠিক হয়ে যায়। এখন সেই সাইড চাপাইতে গিয়ে আরও জ্যাম লেগে যায়। তবে আমরা দায়িত্বে আছি, বেশিক্ষণ লাগবে না অনুকূলে আনতে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু চট্টগ্রাম, বরিশাল, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে। দেশের অবশিষ্টাংশে মৌসুমি বায়ু আরও অগ্রসর হওয়ার জন্য আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে। মৌসুমি বায়ু দেশের পূর্বাঞ্চলের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে এটি মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে।
এর ফলে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
তা ছাড়া সারা দেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বৃষ্টিপাতের প্রবণতাও বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ফজলুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মৌসুমি বায়ু দেশের ওপর সক্রিয় হওয়ার কারণে বৃষ্টি বাড়ছে। আজকে আবার মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী দুই দিন পর্যন্ত বৃষ্টি বাড়তে পারে।’
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ১৪ মিলিমিটার আর সিলেটে সর্বোচ্চ ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।