কঠোর লকডাউনে কর্মহীন পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে চাল বিতরণ অনুষ্ঠানে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও বিশৃঙ্খলা দেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডে বুধবার বেলা ১১টায় চাল বিতরণের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি থেকে মেয়র তাপসের পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে চাল বিতরণ করার কথা ছিল।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান।
বেলা ১১টায় চাল বিতরণ করার আগেই দক্ষিণ সিটির বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হতে থাকেন পরিবহন শ্রমিকরা। অল্প সময়ের মধ্যেই অনুষ্ঠানস্থল শ্রমিক সমাগমে পূর্ণ হয়ে ওঠে।
সেখানে চাল বিতরণের অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই ছিল না। মাস্কহীন পরিবহন শ্রমিকদের জনসমাগম ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে।
শাহজাহান খান ও পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতউল্লাহ শ্রমিকদের সুশৃঙ্খল হওয়ার আহ্বান জানালেও শৃঙ্খলা ফেরে না।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন মেয়র তাপস। তার আগেই এক দফা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করেন শ্রমিকেরা। তখন শাহজাহান খান নিজে শ্রমিকদের কাছে গিয়ে অনুরোধ জানান বিশৃঙ্খলা না করতে।
পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে চাল বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ছবি: নিউজবাংলামেয়র তাপস গিয়ে চেয়ারে বসার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় চরম বিশৃঙ্খলা। এ সময় শ্রমিকরা একে অন্যের দিকে চেয়ার ছুড়ে মারছিলেন।
এমন পরিস্থিতি দেখে পুলিশ এগিয়ে যায় শ্রমিকদের দিকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টার মধ্যেই পাঁচ মিনিট অবস্থান করে চাল বিতরণ না করেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন মেয়র তাপস।
মেয়র ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শাহজাহান খান। তিনি শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, যারা এই ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে তাদের খুঁজে আইনের আওতায় আনা হবে।
শ্রমিকদের মধ্যে চাল বিতরণ শুরুর পাঁচ মিনিট পরে তিনিও ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন করলে শাহজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সব ফাঁকা করেই চেয়ার দিয়েছিলাম। আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা সেভাবে কাজ করেছিল, কিন্তু সেটা মানা হয়নি।’
শ্রমিকদের এমন বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সৃষ্টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘এসব চক্রান্ত করা হয়েছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করে খুঁজে বের করব।’
শ্রমিকদের অভিযোগ, তারা অনেকেই চাল বিতরণের স্লিপ পাননি। ফলে চাল বিতরণ হলেও তারা পাবেন না।
গত বৃহস্পতিবার পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ১০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয় ডিএসসিসি। এ ছাড়া কোভিড-১৯-এ ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়-দুস্থ, কর্মহীন পরিবহন শ্রমিকদের মানবিক সহায়তা হিসেবে ঢাকার ৯ জন সংসদ সদস্য ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন।