হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দি ঝুমন দাশের জামিন আবেদন নাকচের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কয়েকটি বাম ছাত্র সংগঠন। এসময় তারা ঝুমন দাশসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার সবার মুক্তির দাবি জানান।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা ঝুমন দাশের মুক্তি দাও, মুশতাক হত্যার বিচার চাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করো, জান ও জবানের স্বাধীনতা চাইসহ আরও বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন৷
মানববন্ধনে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সহসভাপতি সাইদুল হক নিশান বলেন, এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যাদের গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে তাদের কিন্তু আগে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তারপর গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। এটি আমাদের সংবিধান বিরোধী। আমার শত্রুর বিরুদ্ধেও যদি এই আইনে মামলা হয় আমি সেটির বিরোধীতা করবো৷ কারণ এই আইন জনগণের মতামতকে ক্ষুণ্ণ করার আইন। এসময় তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং এ আইনে গ্রেপ্তার ঝুমন দাশসহ সকলের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের প্রচার সম্পাদক রাকিব জামান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বানিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে। এ আইন শেখ হাসিনার গদির নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে৷ আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি এটা ভুল কথা। একদিকে এরা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে আর অন্যদিকে সবচেয়ে জগন্যভাবে মৌলবাদী শক্তিকে তোষণ করে।
ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসাধারণ সম্পাদক মেঘমল্লার বসু বলেন, ঝুমন দাশ লিখেছিলেন মামুনুল হক এমন একজন লোক যিনি হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। এ কথা যদি অপরাধ হয় তাহলে অনেক মন্ত্রী এমপিদের আজ কারাগারে থাকার কথা। জনগনের ঐক্যকে ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করছে। গত পঞ্চাশ বছর ধরে জনগণকে বিভক্ত করে আমাদের লুটেপুটে খাওয়ার রাজনীতি চলছে। সেই রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদের শক্ত আওয়াজ তুলতে হবে।
নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরামের আহ্বায়ক মার্জিয়া প্রভা মানববন্ধনের সঞ্চালনা করেন। এতে অন্যান্যদের মধ্যে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার বক্তব্য রাখেন।
সুনামগঞ্জের শাল্লার যুবক ঝুমন দাশের এক ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করেই গত ১৭ মার্চ শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা চালায় হেফাজতে ইসলামের অনুসারীরা। এ সময় গ্রামের বাড়িঘর ও মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়। অন্তত ৯০টি বাড়িতে হামলা করা হয়। হামলাকারীদের অভিযোগ, ঝুমন দাশ হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দিয়েছেন। এরপর ঝুমন দাশকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেওয়া হয়।