বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘অফিসের ফোন পেয়ে ঢাকা এসেছি ২৬ ঘণ্টায়’

  •    
  • ২ আগস্ট, ২০২১ ১৪:৩২

শনিবার চেষ্টা করেও কোনো বাস বা ট্রাকে জায়গা করতে পারেননি আদুরি। একই এলাকার আমির হোসেনও কাজ করেন আদুরির সঙ্গে। তারা দুজন রোববার রওনা দিয়ে কয়েকটি যানবাহনে করে ২৬ ঘণ্টা পর নামের ঢাকার গাবতলীতে।

সরকার রপ্তানিমুখী পণ্যের কলকারখানা খুলে দিয়েছে রোববার থেকে। গত শুক্রবার সেই ঘোষণা আসে সরকারের তরফে। এরপর থেকেই ঢাকামুখী মানুষের ঢল নামে।

কারখানা খোলার খবর শনিবার শুনতে পান লালমনিরহাটের পাটগ্রামের আদুরি বেগম। ঈদের আগে বাড়ি ফিরেছেন যাত্রাবাড়ী এলাকার এক পোশাক কারখানায় কাজ করা আদুরি। শনিবার কারখানা থেকে ফোন করে তাকে বলা হয়, রোববার অফিস খোলা, তাকে আসতেই হবে। না আসতে পারলে চাকরি থাকবে না।

শনিবার চেষ্টা করেও কোনো বাস বা ট্রাকে জায়গা করতে পারেননি আদুরি। একই এলাকার আমির হোসেনও কাজ করেন আদুরির সঙ্গে। তারা দুজন রোববার রওনা দিয়ে কয়েকটি যানবাহনে করে ২৬ ঘণ্টা পর নামের ঢাকার গাবতলীতে।

তখন কথা বলে নিউজবাংলা। আদুরি বেগম বলেন, ‘ফ্যাক্টরি থেকে কাজে যোগ দিতে ফোন দিয়েছিল বস। দ্রুত কাজে যোগ না দিলে চাকরি থাকবে না বলে জানায় দেয়। কোনো যানবাহন না থাকলেও আমরা রওনা দিই।’

সঙ্গে থাকা আমির হোসেন বলেন, ‘আমরা ভেঙে ভেঙে আসছি। শনিবার গাড়ি না পেয়ে বাড়িত ফিরি গেছি। রোববার সকালে ফের রওনা দিয়ে ২৬ ঘণ্টায় ঢাকা আসছি।’

তারা জানান, প্রথমে পাটগ্রাম থেকে লালমনিরহাট, তারপর রংপুর; রংপুর থেকে বগুড়া। এরপর আরেক যানবাহনে ঢাকা। রাস্তায় অনেক যানজটও ছিল বলে এতো সময় লেগেছে।

আদুরি বেগম নিজের এই ২৬ ঘণ্টা যাত্রার কষ্টের কথা জানিয়ে বলেন, ‘অফিস থেকে আমাদের বলছে সারা দেশে গাড়ি চলছে, আর তোমরা আসতে পারো না?’

তৈরি পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, তারা শ্রমিকদের কোনো ধরনের চাপ দেয়নি কাজে যোগ দেয়ার জন্য। এমনকি তারা ৫ আগস্টের পর যেকোনো সময় কাজে যোগ দিতে পারবেন। এতে তাদের চাকরি হারাবে না।

কিন্তু শ্রমিকদের অভিযোগ, ফোন করে তাদের কাজে যোগ দিতে চাপ দেয়া হচ্ছে। যোগ না দিলে চাকরি হারাবেন বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে।

সোমবার গাবতলীতে আদুরি ও আমিরের মতো অসংখ্য মানুষকে পাওয়া গেছে যারা অফিসের ফোন পেয়ে যত কষ্টই হোক ঢাকায় এসেছেন।

অনেকে অর্ধেক রাস্তা হেঁটে এসেছেন শুধু চাকরি বাঁচানোর ভয়ে।

রংপুর থেকে মহাখালী এক পোশাক কারখানার কয়েকজন কর্মী সোমবার সকালে গাবতলী পৌঁছান। তাদের একজন মিজানুর রহমান বলেন, ‘অফিস খুলছে তাই আসছি। এক দিন পর আসায় টেনশনে আছি, যদি চাকরি চলে যায়?’

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ থেকে এসেছেন যাত্রাবাড়ী এলাকায় টেক্সটাইলে কর্মরত রাজু হক। তিনি ওই এলাকায় ফকির ফ্যাশন লিমিটেডে কাজ করেন। তিনি জানান, ফ্যাক্টরি থেকে তাকে ১ আগস্টের মধ্যে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। যদি না পারেন তাহলে গত ১২ দিনের যে ছুটি কাটিয়েছে তা মাসের বেতন থেকে কেটে নেয়া হবে।

এমন হুমকি পেয়ে তিনি বহু কষ্টে ঢাকা এসেছেন বলে জানান।

শুধু পোশাক কারখানা নয়, ঢাকায় ফিরেছের রপ্তানিমুখী অন্য প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাও। তেমনই একজন মো. সুজন। তিনি ঢাকায় এসেছেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে। তিনি মিরপুর-২ নম্বরে একটি স্টেইললেইস স্টিল কম্পানিতে চাকরি করেন। তিনি বলেন, অফিস আসতে বলেছে তাই কষ্ট জলেও এসেছে।

এ দিকে শাটডাউনের ১১তম দিনে রাজধানীর সড়কে দেখা গেছে কর্মজীবি মানুষের চাপ। রপ্তানিমুখী পণ্যের কারখানা খুলে দেয়ায় সোমবার সকালে মানুসের যাতায়াত বেশি দেখা গেছে।

গণপরিবহন চলাচল না করায় কর্মমুখী যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। যারা রিকশা চালকদের চাহিদা মেনে নিতে পারছেন তারা রিকশা নিয়েই গন্তব্যে যাচ্ছেন। যাদের সে সামর্থ্য নেই তারা হয় অপেক্ষা করছেন অন্য কোন বাহনের জন্য, না হলে চলছেন হেঁটেই।

এ বিভাগের আরো খবর