ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর নিজের প্রচার বাড়ানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতেন। জেনে বুঝেই এসব কাজের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে হেয় করতেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা স্বীকার করেছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। আলোচনার কেন্দ্রে থাকা এবং নিজের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য এসব কাজ করেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে তার গুলশানের বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার রাতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দুটি এবং পল্লবী থানায় একটি মামলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটিতে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে র্যাব। ওই মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে আছেন তিনি।
মামলাটির তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, জেনে বুঝেই হেলেনা জাহাঙ্গীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য দিতেন। তিনি এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংস্থাকে হেয় করেছেন।
হেলেনাকে আটকে পর র্যাবও প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। র্যাব কর্মকর্তাদের তিনি জানিয়েছিলেন, নিজের প্রচার বাড়াতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সত্য-মিথ্যে তথ্য দিয়ে সরব থাকতেন তিনি।
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী নিউজবাংলাকে বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার অভিযোগ নিয়ে তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। পাশাপাশি আরেকটি মামলার অভিযোগগুলো নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যে অভিযোগ হেলেনার বিরুদ্ধে
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি করা হয়। র্যাব ১ এর সিপিও মো. মজিবর রহমান বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫/২৯/ ৩১ ধারায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। গুলশান থানায় করা মামলা নম্বর ২৬।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও সংস্থাকে কটূক্তি করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করাসহ মিথ্যা তথ্যপ্রকাশ ও প্রচারের প্রমাণ পেয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করা হয়।
এজাহারে বাদী মজিবর রহমান জানান, তিনি সাইবার পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছেন যে হেলেনা জাহাঙ্গীর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী, বিভিন্ন সংস্থাকে কটূক্তি করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করাসহ মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা করছিলেন।
হেলেনা জাহাঙ্গীর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন সন্দেহে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি সাপেক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার গুলশানের বাসায় অভিযান চালান মজিবর। এসময় হেলেনা জাহাঙ্গীরের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। ফোন দুটির মাধ্যমে হেলেনা জাহাঙ্গীরের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট যাচাই করে সাইবার পেট্রোলিংয়ে পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীরের অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়।