ঢাকার সদরঘাটে লঞ্চ থেকে নেমেই যাত্রীরা পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে। ঘরে ফিরতে রিকশা, অটোরিকশা এমনকি বাসের ভাড়া নিয়ে করতে হচ্ছে তুমুল তর্ক। স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ-তিন গুণ বেশি ভাড়া হাঁকছেন চালকরা।
চাঁদপুর থেকে লঞ্চযোগে রোববার সকালে সদরঘাট পৌঁছেন মোক্তার হোসেন। স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি যাবেন মান্ডা এলাকার বাসায়। একটি সিএনজি অটোরিকশা ঠিক করতে গেলে চালক সালাউদ্দিন ভাড়া দাবি করেন ৬০০ টাকা।
মোক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাড়া সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা হতে পারে, কিন্তু চালক দ্বিগুণ ভাড়া চেয়ে বসে আছেন।’
চালক সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা একটু বেশি ভাড়া বেশি চাচ্ছি সত্য। লকডাউনের মধ্যে পথে পুলিশ ধরলে জরিমানা করছে। এ ছাড়া করোনার জন্য কয়দিন ধরে ঘরে বসা। তাই দুই-এক শ টাকা বেশি নিচ্ছি।’
পটুয়াখালীর লঞ্চ থেকে নেমে যাত্রী আফজাল হোসেন বাসায় ফিরতে একটি রিকশা ঠিক করতে যান। কামরাঙ্গীরচর যেতে রিকশাচালক ৪০০ টাকা দাবি করেন।
যাত্রী আফজাল ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘তোরে মার দেয়া দরকার, তুই ব্যাডা এক শ থেকে এক শ বিশ টাকা চাইতে পারিস, কিন্তু চার শ টাকা কীভাবে চাইলি?’ তর্ক-বিতর্কের জেরে রিকশাচালক সেখান থেকে সরে যান। অন্য বাহনের খোঁজে এগিয়ে যান আফজাল।
ভাড়ার এ নৈরাজ্য নিয়ে রোববার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের বাইরে যাত্রীদের বেশির ভাগকে তর্ক-বিতর্কে জড়াতে দেখা যায়।
সকালে তানজিল পরিবহনের একটি বাসের কন্ট্রাক্টর যাত্রীদের ডাকাডাকি করছিলেন। যাত্রী উঠতে গেলে তিনি শ্যামলী, কল্যাণপুরের জন্য এক শ টাকা ভাড়া দাবি করেন। বাসে সিট ফাঁকা রাখা যাবে না বলেও জানান তিনি। এ অবস্থায় যাত্রীদের অনেকে প্রতিবাদ করেন।
বাসের কন্ট্রাক্টর নির্বিকার ভঙ্গিতে বলেন, ‘ভাই, কয়দিন পর দু-এক ঘণ্টার জন্য গাড়ি বের করছি, একটু পর আবার বন্ধ করে দিতে হবে। এক দিনই তো কিছু টাকা বেশি দিবেন? গেলে সিট নেন, আর না গেলে নেমে যান।’
যাত্রী রুহুল আমিন গাড়িতে উঠে বলেন, ‘এই মিয়া আমরা তো সারা বছরই বেশি দিচ্ছি। তোর লকডাউন, শাটডাউনের তো কমতি নাই। আমাদেরও শান্তি নাই।’