বন্ডের অপব্যবহার করে আমদানি করা ৫০৮ রোল চোরাই পর্দার কাপড়সহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল।
রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড ও তেজগাঁও থানার সাতরাস্তা এলাকায় বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম তাদের গ্রেপ্তার করে। এসময় ওই কাপড় বহনের কাজে ব্যবহৃত ছয়টি কার্ভাড ভ্যান জব্দ করা হয়।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. শাহাদাত হোসেন, মো. সাইফুল ইসলাম জীবন, মো. রুবেল আকন, মো. মাসুম, মো. মনির হোসেন, মো. রবিন ওরফে হৃদয় সরদার, মো. শাহিন হাওলাদার, মো. আরিফ হোসেন, মো. সোহাগ ফরাজী, মো. নাজিম ও মো. কামাল হোসেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত পণ্য দেশের কিছু কুচক্রী ব্যবসায়ী খোলাবাজারে বিক্রি করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম রাজধানীতে অভিযান চালায়। গ্রেপ্তার করা হয় ১১ জনকে।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে বন্ড সুবিধায় আমদানি করা ৫০৮ রোল চোরাই পর্দার কাপড় (যার ওজন ১৮ হাজার ৭৫০ কেজি) উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া, চোরাচালানের কাজে ব্যবহৃত ছয়টি কাভার্ডভ্যান জব্দ করা হয়।
পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা বন্ড সুবিধায় চীন হতে শুল্কমুক্ত কাপড় আমদানি করে চট্টগ্রাম পোর্ট হতে ময়মনসিংহ (ভালুকা) হয়ে রাজধানীর সাতরাস্তা স্ট্যান্ড ও এ্যালিফেন্ট রোড এলাকায় নিয়ে আসে। এসব কাপড় অতিরিক্ত লাভের উদ্দেশ্যে সুবিধামত সময়ে খোলা বাজারেও বিক্রি করতো। এতে করে সরকার প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। এ ছাড়া দেশের স্পিনিং, ওয়েবিং, ডাইং ও ফিনিসিং প্রতিষ্ঠান হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রতি অর্থ বছরে বন্ডের মাধ্যমে পণ্য আমদানিতে ৭৩ হাজার কোটি টাকার বেশি শুল্ক ফ্রি সুবিধা প্রদান করে থাকে।
প্রচলিত আইন অনুযায়ী বন্ডের লাইন্সেস ব্যবহারের প্রধান শর্ত হলো বন্ডের পণ্য রপ্তানি ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। যদি কেউ বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত পণ্য বিক্রি করতে চায় সেক্ষেত্রে বন্ড কমিশনারেট থেকে অনুমতি পত্র সংগ্রহ ও বাণিজ্যিক শুল্ক প্রদান করতে হবে।
জব্দকৃত চোরাই পর্দার কাপড় ও কাভার্ড ভ্যান। ছবি: নিউজবাংলা
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে নিউ মার্কেট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়। বলা হয়, এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে কাস্টমসের পাশাপাশি ডিবি পুলিশও কাজ করছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের ডিসি রাজীব আল মাসুদ (বিপিএম) এর দিকনির্দেশনায়, অতি. উপ পুলিশ কমিশনার হাসান আরাফাত (বিপিএম, পিপিএম) এর তত্ত্বাবধানে সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাশের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম অভিযানটি পরিচালনা করেন।