সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনের সপ্তম দিনে রাজধানীর রাস্তায় বেড়েছে মানুষ ও যান। সকাল থেকেই রাজধানীর বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, বাংলামোটর এলাকায় ছিল যানবাহনের চাপ। বিশেষ করে পুলিশের চেকপোস্টগুলোতে রীতিমতো যানজট তৈরি হয়েছে।
রাজধানীর প্রায় সব এলাকাতেই বৃহস্পতিবার দেখা গেছে যানবাহনের 'প্রায় স্বাভাবিক' চলাচল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালে দেখা গেছে গাড়ির লম্বা লাইন। সেখানে রিকশা ও মোটরবাইকের উপস্থিতি ছিল বেশি।
রাজধানীর পান্থপথ, বাংলামোটর ও ফার্মগেট হয়ে যারা যাতায়াত করেছেন তাদের প্রত্যেকেরই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে একাধিক সিগন্যালে।
গাড়ির চালকরা নিউজবাংলাকে জানান, রাজধানীর মধ্যে যেসব জায়গায় দুই বা ততোধিক সড়ক সংযোগ আছে সেখানকার সিগন্যালে দীর্ঘ সময় লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সব গাড়ি চেক না করলেও পুলিশ যেসব যানবাহন থামাচ্ছে তার যাত্রীর পরিচয় ও গন্তব্য যাচাইয়ের পাশাপাশি কাগজপত্র পরীক্ষায় সময় নিচ্ছে অনেক। চেকপোস্টে একসাথে কয়েকটি গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করতে গেলে লেগে যাচ্ছে যানজট।
লকডাউন কার্যকরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়েছে। সেসব স্থানে যানবাহন ও যাত্রীর গন্তব্য যাচাই করা হচ্ছে। বর্তমানে কিছুটা শিথিল হলেও চেকপোস্টের তৎপরতায় কিছু এলাকায় যানজট লেগে যাচ্ছে।
রাজধানীতে চলাচল করা যানবাহনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে ব্যক্তিগত গাড়ি। এরপর মাইক্রোবাস। ব্যাংকসহ জরুরি প্রয়োজনে খোলা থাকা অফিসে কাজের কথা বলে চলছে এসব যানবাহন। লকডাউনে অনুমোদন থাকায় রাজধানীতে রিকশা চলাচল বেড়েছে অনেক। পণ্যবাহী যানের মধ্যে ট্রাক দেখা গেছে খুবই কম।
কাওরান বাজার থেকে এফডিসির দিকের রাস্তায় যেতে রয়েছে মাছের আড়তসহ বেশ কিছু দোকান। প্রতিদিন সকালে সেদিকে যানজট লেগে যায়। লকডাউনের মাঝেই অফিসগামী মানুষ পড়েন ভোগান্তিতে।
ফার্মগেট ও কাওরান বাজারের মূল সড়কের পাশে যেসব গলি রয়েছে সেখানে রিকশাভ্যানে বসেছে কাঁচাবাজার। ছোট ছোট দোকানও রয়েছে খোলা। রাজধানীর অন্য এলাকাগুলোতেও দেখা যায় তরকারি বিক্রেতারা রিকশাভ্যান নিয়ে ঘুরছেন অলিগলিতে। এসব ভ্রাম্যমাণ বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি অনেক। মানুষের সমাগম হলেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক দেখা গেছে কম।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে কর্মস্থলে যেতে সকালে বাসা থেকে বের হতে হয়েছে লোকজনকে। একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আহসান হাবিব বলেন, ‘গুলশান ও ফার্মগেট চেকপোস্টে দেখি প্রাইভেট কারের দীর্ঘ লাইন। মানুষও অন্য দিনের তুলনায় বেশি আজ।’
সড়কে গণপরিবহন বলতে শুধু রিকশা থাকায় চালকরা এর সুযোগ নিচ্ছেন বলে দাবি করছেন অনেকে। তারা বলছেন, রিকশা ভাড়া বেশি চাওয়ায় চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। চার-পাঁচ গুণ বেশি ভাড়া দাবি করছেন তারা সাধারণ মানুষের চলাচলে। জরুরি প্রয়োজনে রাস্তায় বের হওয়া মানুষ বাধ্য হয়ে মেনে নিচ্ছেন তাদের অন্যায্য আবদার।