বজ্রপাতে হতাহত ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী এ নোটিশ পাঠান।
১৫ দিনের সময় দিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশসচিব, পরিকল্পনাসচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবারসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এ সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে জানিয়েছেন নোটিশকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।
নোটিশে বলা হয়, বজ্রপাতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিশেষত কৃষক ও জেলেরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বজ্রপাতে এ বছর মারা যাওয়া ১৭৭ জনের মধ্যে ১২২ জনই কৃষক।
নোটিশে বলা হয়, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ ও গাইবান্ধা দেশের সবচেয়ে বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা। বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা এখন অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন সাইক্লোন, বন্যা, ভূমিধসে নিহত সংখ্যার চেয়ে বেশি। গ্রামীণ এলাকার বিস্তৃত জমি, খোলা মাঠ ও খেলার মাঠ এখন বজ্রপাতের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সরকার যদিও বজ্রপাতকে ২০১৬ সাল থেকে একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে ঘোষণা করেছে, তারপরও বজ্রপাতের ফলে হতাহতের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
নোটিশে আরও বলা হয়, বজ্রপাতে হতাহতের ঘটনা এড়াতে পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল ইতোমধ্যে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশেও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বজ্রপাতের ফলে হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব। পদক্ষেপগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও সচেতনতা তৈরি, আগাম সতর্কতামূলক টেলিযোগাযোগব্যবস্থা তৈরি, হাওর-বাঁওড় এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক বজ্রপাত আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন, পামগাছ রোপণ, মোবাইলে খুদে বার্তা পাঠানো, বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং বজ্রপাত থেকে বাঁচার বিভিন্ন কৌশল লিফলেট আকারে বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় বিতরণ করা। এ ছাড়া বজ্রপাত ও প্রতিরোধসংক্রান্ত যেসব যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে হবে সেসব সরঞ্জাম সহজলভ্য করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নোটিশে অনুরোধ করা হয়েছে।