বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুরান ঢাকায় রিকশায় ‘ডাকাতি ভাড়া’

  •    
  • ২৭ জুলাই, ২০২১ ১৩:২৮

শাটডাউনে পুরান ঢাকায় রিকশা ভাড়া যেন আকাশচুম্বী। রিকশা দিয়ে চলাচলে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া। এই পরিস্থিতিকে ‘ডাকাতি’, ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ বলে উল্লেখ করেছেন কেউ কেউ।

শাটডাউনের কারণে বন্ধ বাসসহ সব ধরনের গণপরিবহন। পাড়া মহল্লায় চলাচলের অন্যতম মাধ্যমে পরিণত হয়েছে রিকশা। কিন্তু চলমান পরিস্থিতির সুযোগে রিকশাচালকেরা যাচ্ছেতাই ভাড়া চাচ্ছেন। উপায় না পেয়ে চড়া ভাড়ায় চলাচল করতে হচ্ছে যাত্রীদের।

রিকশা ভাড়া যেন আকাশচুম্বী পুরান ঢাকায়। রিকশা দিয়ে চলাচলে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া। এই পরিস্থিতিকে ‘ডাকাতি’, ‘মড়ার ওপর খাড়ার ঘাঁ’ বলে উল্লেখ করেছেন কেউ কেউ।

মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জরুরি কাজে মানুষ কর্মস্থলে রিকশায় যাতায়াত করছে। কিন্তু রিকশা ভাড়া দিতে হচ্ছে দুই গুণ থেকে চারগুণ পর্যন্ত।

আর যদি রিকশাচালক একবার বুঝতে পারে তাকে ছাড়া কোনো যাত্রী যেতে পারবে না। তাহলে ভাড়া কত নির্ধারণ হবে তা রিকশাচালক নিজেও জানেন না।

সাধারণ দিনে পুরান ঢাকার হাজারীবাগ বাজার থেকে জিগাতলায় রিকশা ভাড়া ২০ টাকা। ওই রাস্তাটুকু যাতায়াতে এখন ভাড়া গুণতে হয় কমপক্ষে ৫০ টাকা।

সেকশন পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভাড়া ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এখন নেয়া হচ্ছে অন্তত ১০০। লালবাগের নবাবগঞ্জ বাজার থেকে বাবুবাজার ব্রিজ বা মিটফোর্ড হাসপাতালের ভাড়া ছিল ৪০ বা ৫০ টাকা। এখন নেয়া হচ্ছে ১২০ টাকা।

একই চিত্র দেখা যায় লালবাগ কেল্লা, শহীদনগর, ইসলামবাগ, বংশাল, নাজিরা বাজার, আনন্দ বাজার, সিদ্দিক বাজার, আলুবাজার, ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড, গুলিস্তান, ঠাটারিবাজার, ওয়ারি, ধুলাইখাল, রায়শাবাজার, লক্ষীবাজার, শাঁখারী বাজার, ইসলামপুর, সদরঘাট, সোয়ারীঘাট, চকবাজার, নিমতলি, নাজিমউদ্দীন রোড এলাকায়ও।

রিকশাচালকেরা ভাড়া চাওয়ায় যেন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। অনেক সময় যাত্রীরা বাগবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন। ঝগড়াঝাটি করে ভাড়া কমানোর চেষ্টা করেও অনেকে ব্যর্থ হচ্ছেন।

মিটফোর্ড ১ নম্বর গেট থেকে বিল্লাল হোসেন নামক এক যাত্রী যাবেন শহীদনগরে। শহীদনগরের ভাড়া জিজ্ঞাসা করতেই একজন রিকশাচালক ভাড়া চাইলেন ১৫০ টাকা।

ক্ষিপ্ত হয়ে বিল্লাল বলেন, ‘এই মিয়া ডাকাতি করবার আইছো। এই রাস্তাটুকুর ভাড়া ১৫০ টাকা? টাকা কী গাছের পাতা? এমন ডাকাতি ভাড়া চাও। লকডাউন না থাকলেও তো ৪০ টাকায় দৌড়াইয়া যাইতা।’

রিকশাচালকের প্রতি ক্ষোভ দেখালেও দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও শহীদনগরে যাওয়ার কোনো উপায় পাচ্ছিলেন না বিল্লাল। শেষ পর্যন্ত আরেকটি রিকশায় করে ১০০ টাকা ভাড়ায় গন্তব্যে রওনা হন তিনি।

জুয়েল হোসেন নামে আরেক যাত্রী গুলিস্তান থেকে যাবেন পলাশী মোড়ে। কিন্তু রিকশাভাড়া নিয়ে অনেক্ষণ কথা কাটাকাটি করেও ২৫০ টাকার নিচে নামাতে পারছিলেন না তিনি।

নিউজবাংলাকে জুয়েল বলেন, ‘একে তো লকডাউন তার ওপর রিকশা ভাড়া দাঁড়িয়েছে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে। বাস না চলায় রিকশাচালকদের পকেট ফুলছে। বাধ্য হয়েই যাত্রীদের বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে।’

বেশি ভাড়া নেয়ার কারণ দেখালেন মাগুরা জেলার শ্রীপুর থেকে আসা রিকশাচালক মো. তারেক। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘রংপুর, দিনাজপুর, নিলফামারীসহ উত্তর বঙ্গের রিকশাচালকেরা শাটডাউনের মধ্যে ঢাকা ছেড়ে গেছেন। তারা আর ফিরে না আসায় রিকশা অনেক কম, ভাড়াও একটু বেশি।

‘ঢাকায় এখন যারা রিকশা চালাচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই মাদারীপুর, শরীয়তপুর, মানিকগঞ্জ, মাগুরা বা রাজবাড়ীর লোক। তারা লকডাউনে ঢাকা ছেড়ে যায়নি।’

তারেক আরও জানান, অনেকে মিশুক, ইজিবাইক বা অটোচালক রয়েছেন যারা এখন নতুন করে আবার রিকশা চালাচ্ছে। তারা বাড়তি ভাড়া চেয়ে বসে থাকে।

এ বিভাগের আরো খবর