করোনাকালে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে শঙ্কায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, নগরবাসী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেও তথ্য দিতে রাজি হচ্ছেন না। হাসপাতাল থেকেও তথ্য মিলছে না বলে জানান তিনি। বলেন, রোগীর তথ্য নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া না হলে পরিস্থিতি ‘আউট অব কন্ট্রোল’ হয়ে যাবে।
রোববার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ডেঙ্গু নিয়ে এক জরুরি বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসও ছড়াচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের মধ্যে উদ্বেগ স্পষ্ট। আর এই রোগের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নির্দিষ্ট করে দেয়ার বিষয়েও আলোচনা চলছে।
ডেঙ্গু ইস্যুতে র্যাপিড অ্যাকশন টিম গঠন করা হয়েছে বলেও জানান মেয়র আতিকুল। তবে হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য দিতে চায় না বলেও অভিযোগ আছে তার।
আতিকুল বলেন, ‘যখন দেখা যাবে রোগী ২০০, ৩০০, ৪০০ হয়ে গেছে, তখন কিন্তু আউট অব কন্ট্রোল হয়ে যাবে। এখন আমাদের যেটি আছে এটি কিন্তু... হাসপাতাল থেকে আমাদেরকে ঠিকানা দিতে হবে। হাসপাতাল কেন দেয় না? ওই যে সিইও সাহেব বললেন, আমরা ওখানে যেহেতু জরিমানা করব, এজন্য ওনারা এটা বলেন না, এটা বাস্তবতা।’
করোনা মহামারির মধ্যে ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ে সরকারে উদ্বেগ স্পষ্ট
মেয়র বলেন, ‘আমার ডেঙ্গু হয়েছে, আমি আমার ভুল ঠিকানা দিই। আমার আসল জায়গার ঠিকানা দিই না। কারণ উনি জানে, ওনার বাসাতেই ডেঙ্গুর চাষ হচ্ছে। আমাদেরকে ঠিকানাগুলো দিতে হবে।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামকে উদ্দেশ করে আতিকুল আরও বলেন, ‘গুলশানের ৮৬ নম্বর রোডে আপনি গিয়েছেন, অতিরিক্ত সচিবও ছিলেন। সচক্ষে দেখেছেন, কীভাবে ওখানে লার্ভার চাষ হচ্ছে। সুতরাং যার যার বাড়ি তাকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’
সেখানে এক প্রকৌশলীকে ৩ মাসের জেল দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি চলমান আছে।’
নায়ক অনন্ত জলিলের মোহাম্মদপুরের বাড়ির প্রসঙ্গ টেনে ঢাকা উত্তরের মেয়র বলেন, ‘ওই বাড়ির যে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার, তাকে ৬ মাসের জেল দেয়া হয়েছে। আমাকে অনেক ইঞ্জিনিয়ার ফোন দিয়েছিলেন, উনাকে যাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমি বলেছি, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট দিয়েছেন, ছেড়ে দেয়ার অধিকার আমার নেই।’
ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম মনে করেন ডেঙ্গু রোগীর তথ্য না পেলে ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে
বৈঠকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘বিধিনিষেধে সকল কিছু বন্ধ থাকলেও আমাদের দপ্তর চালু, সার্বক্ষণিক কাজ করছি। আমাদের বছরব্যাপী কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যার কারণে আমরা নিয়ন্ত্রণে (ডেঙ্গু) রাখতে পেরেছি।’
শিগগিরই সবাইকে নিয়ে চিরুনি অভিযান শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘অনলাইনে অভিযোগ জানানো যায়। জানালে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়ে ব্যবস্থা নেব।’
জনবলের অভাব রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়গুলো যতটা তরান্বিত করা যায় ততই ভালো। মাঠ পর্যায়ে এই জনবল কাজ করে। তাই তাদের প্রয়োজন আছে।’