করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ঈদুল আজহার ছুটি পরবর্তী ‘সবচেয়ে কঠোর’ লকডাউন বাস্তবায়নে রাস্তায় নেমেছে সেনাবাহিনী।
রাজধানীর সদরঘাট, আর কে মিশন রোড, টিকাটুলী, মতিঝিল, বনশ্রীসহ বিভিন্ন এলাকায় শুক্রবার সকাল থেকেই টহল দিতে দেখা যায় সেনা সদস্যদের।
কিছু জায়গায় চেকপোস্টে পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যদেরও চোখে পড়ে। তবে চেকপোস্টের চেয়ে টহল দিতে বেশি দেখা যায় তাদের।
গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায় সেনা সদস্যদের। যাদের মুখে মাস্ক নেই তাদের মাস্ক পরার তাগিদ দেন তারা। এ ছাড়া মূল সড়কগুলোতে রিকশা যাতে সারিবদ্ধভাবে চলে, সে বিষয়টিও খেয়াল রাখছেন তারা।
যারা অপ্রয়োজনে বাসা থেকে বের হয়েছেন, তাদের বাসায় ফেরার তাগিদ দিচ্ছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
সেনারা এক জায়গায় বেশি সময় থাকছেন না। পুরো শহরে টহল দিচ্ছেন। রাজধানীজুড়ে একেক সময় একেক জায়গায় তাদের চোখে পড়ছে।
করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ঈদের আমেজ কাটার আগেই শুক্রবার থেকে আবারও ১৪ দিনের জন্য লকডাউন দিয়েছে সরকার।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এবারের লকডাউন হবে ‘সবচেয়ে কঠোর’। আর তা বাস্তবায়নে আগেরবারের মতো পুলিশের পাশাপাশি দেশজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনীকেও।
ঈদ উপলক্ষে চলমান শাটডাউন আট দিনের জন্য শিথিল করে গত ১৩ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দেয়া প্রজ্ঞাপনেই অবশ্য বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিউজবাংলাকে আবারও নিশ্চিত করেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
তিনি জানান, এবারের লকডাউন হবে অন্য যেকোনো বারের চেয়ে কঠোর।
ফরহাদ বলেন, ‘যেহেতু অফিস-আদালত এবং গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, রপ্তানিমুখী সবকিছু বন্ধ থাকবে, তাই এটা এ পর্যন্ত যতগুলো লকডাউন হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে কঠোর হবে…এটি বাস্তবায়নে মাঠে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও সেনা সদস্যরা থাকবেন।’
১৩ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনায় ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত শাটডাউন আরোপ করা হবে। আর ওই সময়টায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষের চলাচল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
জেলা ম্যজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনাবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাব ও আনসার নিয়োগ ও টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি ও সময় নির্ধারণ করবেন। সেই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।
২০২০ সালেও দেশজুড়ে অঘোষিত লকডাউন শুরু হলে তা বাস্তবায়নে মাঠে ছিল সেনাবাহিনী।