পূর্বঘোষিত সময়ের আগেই কোরবানির বর্জ্য অপসারণ শুরু করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। কোরবানির পরপরই বর্জ্য সরিয়ে নিচ্ছে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
ঢাকা দক্ষিণে বেলা দুইটার কথা বলা হলেও বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে এর আগেই শুরু হয়েছে বর্জ্য অপসারণ। কোরবানির কাজ শেষ করার পরপরই পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে অলিগলি। একই চিত্র উত্তরেও।
অভিজাত এলাকার গলিগুলোতে পরিচ্ছন্নের কাজ অনেকটাই শেষ। অন্যান্য স্থানগুলোতে আস্তেধীরে চলছে বর্জ্য অপসারণ।
বায়তুল মোকাররমে বুধবার সকাল ৭টায় ঈদের প্রথম জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় শেষে বর্জ্য অপসারণ নিয়ে কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ফজলে নূর তাপস। তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হবে।
একই কথা বলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামও।
বুধবার সকাল থেকেই ঢাকার দুই সিটিতে কোরবানি দেয়া শুরু হয়। দুই সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, রাজধানীতে এবার প্রায় ১০ লাখ পশু কোরবানি দেয়া হবে।
দক্ষিণের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে দেখা যায়, ৬০ ভাগ বর্জ্য বেলা আড়াইটার মধ্যে অপসারণ করা হয়েছে। ডিএসসিসির জনসংযোগ কার্যালয় থেকে জানানো হয় বেলা দুইটায় একযোগে ৭০টি ওয়ার্ড থেকে বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু হবে।
নিউজবাংলার আলোকচিত্রী পিয়াস বিশ্বাস বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানিয়েছেন, ডিএসসিসি সময়ের আগেই কাজ শুরু করেছে।
ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. বদরুল আমিন নিউজবাংলাকে বলেন, আমরা গতকাল রাত থেকেই কোরবানির হাটের বর্জ্য অপসারণ করার কাজ শুরু করেছি। আজ সকাল থেকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বেলা দুইটার সময় কাজ শুরু হবে। আমরা নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে রাতে বিস্তারিত জানাতে পারব।
এবার ঢাকা দক্ষিণে প্রায় ৭ লাখ পশু কোরবানি দেয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আমরা শুরু করছি কাজ আশা করি শিগগিরই শেষ করতে পারব।’
অন্যদিকে ঢাকা উত্তরের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে জানোনো হয়েছে, বর্জ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন এলাকায় ডাম্প ট্রাক, পিকআপ ও অন্যান্য পরিবহন পাঠানো হচ্ছে।
জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাসার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেলা দুইটার পর মেয়র মহোদয় ভাটারা সাইননগর অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।’
তবে উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখে গেছে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ভ্যানে করে পশুর চামড়া ও অন্যান্য বর্জ্য অপসারণ শুরু করে দিয়েছেন।
বর্জ্য অপসারণ সুবিধার কথা বিবেচনা করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আগেই পশু কোরবানির জন্য ৩০৭টি স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিল। তবে এসব স্থানে কোরবানি দিতে আগ্রহ কম নগরবাসীর। বেশির ভাগ কোরবানিই দেয়া হচ্ছে রাস্তার পাশে।
ডিএসসিসি থেকে জানা গেছে, ৯০টি খোলা ট্রাক, ৫৩টি কম্পেক্টর, ১২টি পানির গাড়ি, ১০২টি ডাম্প ট্রাক, ১৪টি পে-লোডার, ৮১টি কনটেইনার ক্যারিয়ার, ৯টি টায়ার ডোজার, ২টি ট্রেইলার, ৯টি স্কিড লোডারসহ প্রায় পৌনে ৪০০ যান-যন্ত্রপাতি মাঠপর্যায়ে বর্জ্য সরানোর কার্যক্রমে যুক্ত থাকছে।
অন্যদিকে উত্তরে ঈদ উপলক্ষে বর্জ্য পরিবহন সক্ষমতা কমপক্ষে ১০ হাজার টনে উন্নীতকরণে প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ঈদের আগের দিন থেকে ঈদের পরবর্তী দুদিন নিরবচ্ছিন্নভাবে বর্জ্য অপসারণের জন্য বর্জ্যবাহী ড্রাম্প ট্রাক (খোলা ট্রাক), ভারী যান-যন্ত্রপাতি, পানির গাড়ি, বেসরকারি ও ভাড়ায় পিকআপ ভ্যানসহ মোট ৪৯৩টি গাড়ি নিয়োজিত থাকবে।