বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গাবতলীর হাটে স্বাস্থ্যবিধি ‘বাইরে’

  •    
  • ১৮ জুলাই, ২০২১ ২০:৩৫

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) একমাত্র স্থায়ী পশুর হাট গাবতলীতে। এ হাটের বাইরে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর জন্য যথেষ্ট চেষ্টা দৃশ্যমান। কিন্তু হাটের ভেতরের চিত্র ঠিক তার উল্টো। হাটের ব্যাপারীরা স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করছেন অহরহ।

করোনা মহামারির মধ্যে ঈদুল আজহায় সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বসেছে পশুর হাট। কিন্তু গাবতলী হাটের বাইরে কড়াকড়ি থাকলেও ভেতরে উধাও করোনা সতর্কতা। মাস্ক পরে থাকতে অনীহা বেশির ভাগ ক্রেতার। হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব রক্ষার তোয়াক্কা করছেন না বিক্রেতারা।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) একমাত্র স্থায়ী পশুর হাট গাবতলীতে। এ হাটের বাইরে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর জন্য যথেষ্ট চেষ্টা দৃশ্যমান। কিন্তু হাটের ভেতরের চিত্র ঠিক তার উল্টো। হাটের ব্যাপারীরা স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করছেন অহরহ। বৃষ্টির পানি জমে হাট হয়ে উঠেছে কর্দমাক্ত। সেখানে ক্রেতারা চলাচল করতে গেলেও জটলা তৈরি হয়ে যাচ্ছে। শারীরিক দূরত্ব রক্ষার তাগিদ নেই কারও।

করোনা পরিস্থিতিতে পশুর হাটের জন্য ১২টি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। যার বেশির ভাগই মানতে দেখা যায়নি গাবতলীর পশুর হাটে।

হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটের সামনে একদল স্বেচ্ছাসেবী মাস্ক সরবরাহ করছেন সকলকে। হাটের কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানতে সকলকে অনুরোধ করা হচ্ছে। মাস্ক পরতে ও হাত ধুতে বলা হচ্ছে বারবার। হাটে প্রবেশমুখে রয়েছে পানিসহ হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। কিন্তু সেখানে কাউকে হাত ধুতে দেখা যাচ্ছে না।

হাটের ভেতরে ঢুকে দেখা গেল, পশুর ব্যাপারীদের অনেকের মুখে নেই মাস্ক। জিজ্ঞাসা করলেই অভিন্ন জবাব- ‘মাস্ক আছে, এখন খুলে রাখছি, তবে সব সময় পরি’।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থেকে গরু নিয়ে গাবতলী হাটে এসেছেন ব্যাপারী মোহাম্মদ হানিফ। মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি সব সময় মাস্ক পরি। তবে এখন বেশ গরম, তাই খুলে রেখেছি। চা খেতে আসছিলাম তো, তাই এখন পরিনি।’

গরুর হাটে ক্রেতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ৭টি গরু নিয়ে আসছি। প্রত্যেকটি গরুর দাম ৩ লাখের ওপরে। এখন পর্যন্ত একটা গরু বিক্রি করতে পারিনি। কী হবে বুঝতে পারছি না। করোনার কারণে এবার কাস্টমারই নাই।’

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা শহীদ আলী গাবতলীর হাটে গরু কিনতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘হাটের ভেতরে যেখানে দরদাম হচ্ছে সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। তবে হাটের বাইরে তো সবাইকে মাস্ক দিচ্ছে। মাইকেও বারবার মাস্ক পরার কথা বলছে।’

শক্তি ফাউন্ডেশনের একজন স্বেচ্ছাসেবী নাইমুর রশিদ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে তাদের একটি টিম গাবতলীর গরুর হাটে কাজ করছেন। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষকে সচেতন করছেন। নাইমুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসলে আমরা চেষ্টা করছি, জোর তো করতে পারি না। স্বাস্থ্যবিধি বলতে যা বোঝায়, তা মানছেন না গরুর ব্যাপারীরা। আমরা ক্রেতা-বিক্রেতা সবার জন্যই মাস্ক সরবরাহ করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের টিমে ৪০ জন কাজ করছেন। আমরা মানুষকে বোঝাচ্ছি। হাটের ভেতরে গিয়ে যদি কেউ মাস্ক খুলে ফেলেন, তা আমাদের পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। বাইরে থেকেই আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

গাবতলী পশুর হাটে দায়িত্ব পালন করছিলেন দারুস সালাম থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জুয়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘হাটে যারা এসেছেন তাদের প্রত্যেককে মাস্ক পরতে বলা হচ্ছে। যাদের কাছে নেই, তাদের সকলকে মাস্ক সরবাহ করা হচ্ছ। কিন্তু অনেক ব্যাপারী হাটের ভেতরে ও বাইরে মাস্ক পরছেন না। অনেকে আবার থুতনির মধ্যে মাস্ক ঝুলিয়ে রাখছেন। তাদের নাকি গরম লাগে।’

করোনা পরিস্থিতিতে গাবতলীর গরুর হাটে ক্রেতার উপস্থিতি একেবারেই কম। তা নিয়ে হতাশ ব্যাপারীরা। পাবনার আমিনপুর থেকে গাবতলী এসেছেন রমজান মন্ডল। তিনি বলেন, ‘কাস্টমারই তো নাই। অনেকে দেখতে আসতেছে, দরদাম করে নিবো বলেই চলে যাইতেছে, কী যে করি। পরশু আইছি, মাত্র একটা গরু বেঁচতে পারছি।’

হাট ইজারাদার লুৎফর রহমানের ছেলে রাকিব ইমরান বলেন, ' গাবতলী অনেক বড় গরুর হাট। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু ক্রেতা-বিক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আমাদের তেমন কিছু করার তো নেই।'

এ বিভাগের আরো খবর