অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় পাসপোর্ট অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক মোতালেব হোসেন ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহানকে জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে রোববার তারা জামিনের আবেদন করলে শুনানি শেষে বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ সংস্থাটির উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে গত ৩০ জুন মোতালেব ও তার স্ত্রী ইসরাতের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেন।
মামলায় প্রায় ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে এই দম্পতির বিরুদ্ধে।
এর আগে প্রাথমিক তদন্তে আসামি দুজনের বিরুদ্ধে বিপুল সম্পদের সন্ধান পায় দুদক।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী উপপরিচালক মোতালেব হোসেন। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তার সম্পদের পরিমাণ ৮৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা। তার মৎস্যজীবী স্ত্রী ইসরাত জাহানের সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি টাকার বেশি।
সম্পদের অনুসন্ধান করতে গিয়ে দুদক জানতে পারে, চাকরিজীবনে মাত্র পাঁচ মাস ছাড়া মোতালেব পাসপোর্ট অফিস থেকে সরেননি কখনও। অভিযোগ রয়েছে, তার ইশারায় বদলি হয় সবার।
২০ বছরের চাকরিজীবনে ঢাকার বাইরে কর্মরত ছিলেন মাত্র পাঁচ মাস। ২০০০ সালের ৩০ জানুয়ারি সাঁটলিপিকার পদে পাসপোর্ট অফিসে তার চাকরিজীবন শুরু।
আয়কর নথি বলছে, আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে মোতালেব হোসেনের সম্পদের পরিধি। নিজের নামে পটুয়াখালীতে একের পর এক জমি কিনে সেগুলো দেখান পৈতৃক সম্পদ হিসেবে।
দুদক থেকে জানানো হয়, ২০১৫ সালে মোতালেব পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী হওয়ার পর সম্পদের পাহাড় গড়া শুরু হয় তার। অঢেল সম্পদের বৈধতা দিতে স্ত্রীকে মৎস্য ব্যবসায়ী হিসেবে আয়করে উল্লেখ করে ২০১৫ সালে স্ত্রীর নামে বরিশালের রূপাতলীতে কেনেন ২৯ লাখ টাকার জমি। আর গাজীপুরে কেনেন প্রায় সাড়ে ৩২ লাখ টাকার জমি। ২০১৬ সালে স্ত্রীর নামে মিরপুরে একটি ১১তলা ভবনে কেনেন ৬৮ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, মোতালেব-ইসরাত দম্পতির মোট সম্পদের মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে মোতালেবের সাড়ে ৩৪ লাখ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকারই কোনো বৈধ উৎস নেই।