রাজধানী ঢাকার গাবতলীর হাটের এক নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সারি সারি গরু। এর মধ্যে চোখ ছুটে যাবে বিশাল আকৃতির গরুগুলোর দিকে।
ওই সারির মধ্যে সবচেয়ে বড়সড় যে গরুটি সেটি হলো গোপালগঞ্জের ‘লাল বাহাদুর’। পাশের সারির টাঙ্গাইলের ‘হিরো’ এবং জামালপুরের ‘জামাই বাবু’ও কম আকর্ষণীয় নয়।
লাল রঙ বলেই গোপালগঞ্জের গরুটির নাম ‘লাল বাহাদুর’। আশেপাশে দিয়ে কেউ গেলে গরুটির দিকে তাকাতে হবেই। আটকে যাবে চোখ।
বিশাল আকৃতির গরু হলেও গায়ের গরম নেই লাল বাহাদুরের। একেবারেই শান্তশিষ্ট। গরুটিকে ঘিরে উৎসক জনতার ভিড় লেগেই থাকে। দাম শুনে অনেকে চমকে উঠলেও গাবতলী হাটে পছন্দের তালিকায় লাল বাহাদুরই শীর্ষে।
দুদিন আগে লাল বাহাদুরকে ঢাকায় নিয়ে আসা বিক্রেতা নজরুল ইসলাম ক্লান্ত বিধায় বিশ্রামে গিয়েছেন। গরুটির পাশে রেখে গেছেন দুই স্বজনকে। তারা জানালেন, লাল বাহাদুরকে কিনতে হলে গুনতে হবে ১২ লাখ টাকা। ধারণা, সাড়ে তিন বছর বয়সী লাল বাহাদুরের ওজন হবে কম করে হলেও ২২ থেকে ২৫ মণ।
টাঙ্গাইলের হিরো
পাশের সারিতেই রয়েছে লাল বাহাদুরকে টেক্কা দেয়ার মতো গরু টাঙ্গাইলের ‘হিরো’। গরুটি এনেছেন মো. কামরুজ্জামান। তিনি জানান, দুটি গরু নিয়ে গাবতলীর হাটে এসেছেন। এর মধ্যে বড়টির নাম দিয়েছেন টাঙ্গাইলের হিরো।
দেখতে আসলে হিরোর মতই। সাদা-কালো মিশ্রিতি গরুটি উচ্চতায় প্রায় ৬ ফুট। ৩১ মন ওজনের বিশাল আকৃতির গরুটির দাম ১৫ লাখ টাকা চেয়েছেন কামরুজ্জামান।
হাটের প্রথম সাড়ি ধরে ভেতরে গেলেই চোখে পড়বে জামালপুরের ‘জামাই বাবু’কে।
জামালপুরের মো. দুদু মিয়া এবারের হাটে ৭৪টি গরু নিয়ে হাজির হয়েছেন। এর মধ্যে সব থেকে বড় গরুটিকে আদর করে নাম দিয়েছেন ‘জামাই বাবু’। ৭৪টি গরুর মধ্যে চারটি গরু বিক্রি হয়েছে। এখনও ৭০টি গরু আছে। প্রত্যাশা করছেন ঈদের আগের রাতেই সবগুলো গরু বিক্রি হয়ে যাবে।
জামালপুরের জামাই বাবু
শনিবার গাবতলীর হাট ঘুরে দেখা যায় বিশাল আকৃতির মহিষও রয়েছে উল্লেখযোগ্য। আকারভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে মহিষগুলো। এ ছাড়া, হাটে রয়েছে ছাগল, ভেড়া ও উট।
অন্যবার অনেক সংখ্যক উট থাকলেও এবার গাবতলী হাটে উঠ মাত্র একটি।
ঈদের বাকি তিনদিন। এরই মধ্যে হাট প্রায় ভরে গেছে। দুপুরের আগে ক্রেতা সংখ্যা কম থাকলেও বিকেল নাগাদ ক্রেতা সংখ্যা বাড়তে থাকে।
বিক্রেতারা বলছেন, হাটে লোকজন অনেক থাকলেও এখনও তেমন বেচা বিক্রি শুরু হয়নি। তবে সোমবার ও মঙ্গলবার বেচা বিক্রি ধুম পড়বে বলে তারা আশা করছেন।
নজরকাড়া মহিষও রয়েছে গাবতলী পশুর হাটে
তাদের যুক্তি, করোনার কারণে মানুষ আগের মতো ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছেন না। আগে আগে গরু-ছাগল কিনে রাখা এবং তার যত্ন নেয়া অনেকটা কঠিন। এই কারণে অধিকাংশ ক্রেতা ঈদের এক দিন আগেই কিনতে আগ্রহী।
করোনার সংক্রমণ রোধে হাটের প্রবেশপথে নির্মাণ করা হয়েছে জীবাণুরোধী গেট। মাস্ক ছাড়া যাতে কেউ প্রবেশ না করে সেজন্য বার বার হাট ইজারাদারদের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য সচেতেনতার ব্যপারে সতর্ক করা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে চাইলে হাটের স্বেচ্ছাসেবকেরা বাঁধা দিচ্ছে। ব্র্যাকের পক্ষ থেকে ফ্রি মাস্ক বিতরণ করতে দেখা গেছে।
গাবতলী ছাড়াও রাজধানী ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে বিভিন্ন জায়গায় এবার ২০টির মতো গরুর হাট বসেছে। ৪৬টি শর্তে এসব গরুর হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।