বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লোকাল ট্রেনে পিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি

  •    
  • ১৭ জুলাই, ২০২১ ১৫:০১

রাজশাহী কমিউটার ট্রেনের ভেতরে দেখা যায়, এক লাইনের আসনে গাদাগাদি করে বসেছেন যাত্রীরা। লোকাল বাসের মত অনেকেই দাঁড়িয়ে আছেন। ভিড় এত বেশি যে দরজার কাছেও দাঁড়ানোর জায়গা নেই।

অনলাইনে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হলেও কমিউটার ট্রেনের টিকিট কাউন্টারেই পাওয়া যাচ্ছে। তাতে স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় উঠেছে কমলাপুর রেল স্টেশনে।

শনিবার স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় আন্তঃনগর ট্রেনের ব্যবস্থা ঠিকঠাক থাকলেও লোকাল ট্রেনে তিল ধারণের জায়গা নেই। যাত্রীদের অভিযোগ যে পরিমাণ টিকিট ছাড়া হচ্ছে ট্রেনে সে পরিমাণ সিট নেই। আবার অনেকেই স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটে উঠেছেন।

রাজশাহী কমিউটার ট্রেনের ভেতরে দেখা যায়, এক লাইনের আসনে গাদাগাদি করে বসেছেন যাত্রীরা। লোকাল বাসের মত অনেকেই দাঁড়িয়ে আছেন। ভিড় এত বেশি যে দরজার কাছেও দাঁড়ানোর জায়গা নেই।

এর আগে ১৪ জুলাই ঘোষণা দেয়া হয়, করোনার ঝুঁকি এড়াতে সরকারি নির্দেশনা মেনে অর্ধেক আসনে ট্রেন চলাচল করবে। তবে টিকিট নিতে হবে অনলাইনে। কাউন্টারে শুধুমাত্র লোকাল ও কমিউটার ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে।

সার্বিক বিষয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবস্থা নিতে। আমাদের আন্তঃনগর ট্রেনে কিন্তু কোনো ঝামেলা নেই। স্টেশনেও সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই প্রবেশ করছেন।’

লোকাল ট্রেনের কথা জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সেখানেও চেষ্টা রয়েছে। তবে যাত্রীর চাপ সামলানো একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমরা বারবার বলছি, তবে অনেকেই শুনতে চান না।

‘এত যাত্রী একসঙ্গে যাত্রা করলে এমন অসুবিধা হবে। আমাদের স্টেশনে আমরা সর্বোচ্চভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভ্রমণের ব্যবস্থা করছি। তবে এই ট্রেন গাজীপুর বা বিমানবন্দর পার হলে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়।’

রাজশাহী কমিউটার ট্রেনের যাত্রী আহসান হাবিব জানান, তারা দুইটা টিকিট কেটেছেন তবে সিট পেয়েছেন একটা। স্ত্রী ও ছোট বাচ্চা নিয়ে কোনোমতে বসতে পেরেছেন। হাবিবের আশেপাশে আসন একটিও ফাঁকা নেই। বরং যাত্রীরা দাঁড়িয়ে আছেন তার গা ঘেঁষে।

একই কথা জানালেন জামালপুরগামী যাত্রী মাসুদ কবির। মাসুদ বলেন, চারটি টিকিট কাটলেও সিট পাননি তিনি। চারজনই দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছেন।

এভাবে টিকিট কেটে কেন যাচ্ছেন জানতে চাইলে মাসুদ বলেন, ‘আমার আর কোনো উপায় নেই। যেতে তো হবেই। দুইটা সিট চেয়েছিলাম যাতে ভাগাভাগি করে বসতে পারি। তাও হয়নি।’

লোকাল ও কমিউটার ট্রেনের ভেতরকার চিত্র দেখা গেলো এসব ট্রেনের কাউন্টারেও।

মাদ্রাসার ১৬জন ছাত্র নিয়ে জামালপুর যাওয়ার টিকিট কাটতে এসে ব্যর্থ হয়েছেন একজন শিক্ষক। জানালেন, তারা জামালপুর যাবেন। তবে সিট ফাঁকা নেই। ছাত্রদের নিয়ে কোনোভাবে বাড়ি যাওয়ার চেষ্টায় মরিয়া তিনি।

কমলাপুর রেলস্টেশনের বাইরে ও আন্তঃনগর প্ল্যাটফর্মের চারপাশে যাত্রীদের চাপ নেই বললেই চলে। অনলাইন টিকিটের কারণে এক আসন ফাঁকা রেখে এক আসনে যাত্রী বসানোর নির্দেশনার কারণে যাত্রীর পরিমান অর্ধেক হয়ে গেছে।

বিপরীত চিত্র লোকাল ট্রেনের প্ল্যাটফর্মে। যাত্রীদের ভিড়ে উধাও স্বাস্থ্যবিধি। করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির বিষয়টি যেন কারো মাথায় নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের এক কর্মকর্তা জানালেন, তাদের কাছে টিকিটের জন্য অনেক বেশি অনুরোধ আসে, যা তারা না করতে পারেন না।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ট্রেন ছাড়ার আগে বলা হয়, আমি অমুক। আমার কয়েকজন যাত্রী আছে, তাদের তুলে দিতে হবে। তখন আমরা নিরুপায় থাকি। এক্ষেত্রে আন্তঃনগর ট্রেনেও প্রেসার পড়ে। আস্তে আস্তে এটি আরও বাড়তে পারে। আমাদের ঢাকার মধ্যে নিয়ম মানা হলেও ঢাকার বাইরে অবস্থা আরও খারাপ। এখান থেকে এক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী উঠালেও সেটি ঢাকার বাইরে গেলে আর ঠিক থাকে না।’

বৃহস্পতিবার রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছিলেন, ‘আমাদের কয়েকটি স্টেশনে যাত্রী প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধা আছে। আমরা লোকাল ট্রেনের টিকিট বিক্রি করছি স্টেশন থেকে। স্বাস্থ্যবিধি যে সেখানে মানা হচ্ছে না এই আশঙ্কা আমার ছিল। তবে আমাদের দীর্ঘদিনের যে ট্রেন্ড সেটা রয়েছে। আমাদের প্রত্যেকের অভিজ্ঞতা আছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

তবে আন্তঃনগর ট্রেনে তেমন যাত্রীর চাপ নেই। মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধিও। ছবি: নিউজবাংলা

লোকাল ট্রেনে যে যাত্রী ব্যবস্থাপনা ব্যত্যয় হচ্ছে তা জানা আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সব স্টেশনে তো আমরা কন্ট্রোল করতে পারিনি। মানুষ দাঁড়িয়ে হুড় হুড় করে উঠে যায়। এটা নিয়ন্ত্রণ করার যে টেকনিক সেটা তো এখনও ঠিক করতে পারিনি।’

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৩ জুন থেকে বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। ঈদ উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার থেকে শাটডাউন শিথিল হওয়ার পর থেকেই বাস, লঞ্চ ও বিমানের মতো শুরু হয়েছে ট্রেন চলাচলও। ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের সেবা দেবে মোট ৩৮ জোড়া আন্তঃনগর এবং ১৯ জোড়া লোকাল ট্রেন।

এ বিভাগের আরো খবর