কুমিল্লার বুড়িচংয়ে দশ বছরের শিশু মিনহাজুল আবেদিন তানিম হত্যা মামলায় আসামি মাহবুবুর রহমানের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছে সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে এ রায় দেন।
নিয়ম অনুযায়ী রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশের পর আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি হবে। কারা কর্তৃপক্ষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উদ্যোগ নিবে। তবে আসামি রিভিউ আবেদন করলে ফাঁসি কার্যকর স্থগিত থাকবে।
এরপর রিভিউ আবেদন খারিজ হলে ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো আইনগত বাধা থাকবে না। সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার একটি সুযোগ থাকবে আসামির। এতে কনডেম সেলে থাকা আসামি মাহবুবুর রহমানকে ফাঁসির মঞ্চে যেতে সামনে আর মাত্র একটি ধাপ বাকি থাকল।
বৃহস্পতিবার আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম বক্স কল্লোল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালে দশ বছরের শিশু মিনহাজুল আবেদিন তানিম স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পর তাকে প্রথমে দেয়ালের সঙ্গে আঘাত দিয়ে আহত করেন মাহবুব। এরপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে শিশুটির গলা কেটে হত্যা করে বালু চাপা দিয়ে রাখা হয়। পরে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণও দাবি করে মাহবুব ও তার দুই সহযোগী।
এ ঘটনায় শিশুটির মা মামলা করলে পুলিশ প্রথমে রিপন চন্দ্র দাস ও আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মূল আসামি মাহবুবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনজনই জবানবন্দি দেন।
মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারিক আদালত আসামি মাহবুবুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে বাকি দুই আসামি রিপন চন্দ্র দাস ও আলমগীরকে সাত বছর করে সাজা দেয়।
পরে মামলাটির ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। একই সঙ্গে আসামিরাও আপিল করে। হাইকোর্ট শুনানি নিয়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে অপর আসামি রিপন চন্দ্র দাসকে সাত বছর এবং আলমগীরকে খালাস দিয়ে রায় দেয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামি মাহবুবুর রহমান। ওই আপিলের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।
এদিকে আপিল বিভাগ আরেকটি মামলার শুনানি নিয়ে সন্ত্রাসী রোজেন গ্রুপের সদস্য আসামি জসিমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ১৩ আগস্ট রাজধানী ঢাকায় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সন্ত্রাসী রোজেন গ্রুপের সদস্যরা ফরিদ উদ্দিন সরকারকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০১০ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আসামি জসিম ও কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেয়। এরমধ্যে অভিযুক্ত কামাল হোসেন পলাতক ছিলেন।
মামলাটি হাইকোর্টে এলে সেখানেও জসিমের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। এরপর আপিল বিভাগে আবেদন করলে আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার মামলাটি শুনে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেয়।