শাটডাউন শিথিলে ঈদযাত্রা শুরু হয়ে গেছে ঢাকার নদীবন্দর সদরঘাট থেকে। তবে এখনও আগের মতো চাঞ্চল্য ফেরেনি সেখানে।
বুধবার মধ্যরাত থেকেই লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। তখন শুধু চাঁদপুর রুটে লঞ্চ ছেড়ে যায়। অন্য কোনো রুটে লঞ্চ চলাচল করেনি। একই চিত্র বৃহস্পতিবার সকালেও। চাঁদপুর রুটে একের পর এক লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীর খুব বেশি চাপ নেই।
লঞ্চ টার্মিনাল ও আশপাশে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সজাগ বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। একটু পর পর মাস্ক পরিধানের জন্য মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
টার্মিনালে ঢোকার সময় মাস্ক পরলেও ভেতরে গিয়ে কিংবা লঞ্চের ডেকে বসে মাস্ক খুলে ফেলতে দেখা গেছে যাত্রীদের।
অনুপম নামের বরিশালগামী একজন যাত্রী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল ৮টায় লঞ্চ ছাড়ার কথা তবে এখনও ছাড়ছে না। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বলছে একটু পরই ছেড়ে দিবে। ভাড়া ৬০ শতাংশ বেশি সেই ৪০০ টাকাই নিয়েছে।’
মিজান নামের একজন যাত্রী নিউজবাংলাকে বলেন, লঞ্চ সচরাচর বিকেলে ছেড়ে যায়। তখন প্রচুর ভিড় হয়। তাই সকালে রওনা হয়েছি। এবার ভালোভাবে বাড়ি ফিরতে পারলেই হয়।
সুমন নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী যাবেন চাঁদপুরে। তিনি বলেন, ‘সকাল সকাল যাত্রা শুরু করেছি। ভিড় কম থাকবে এতে করে সংক্রমণের ঝুঁকিটাও কম হবে।’
মিরপুর থেকে স্বামী ও দুই ছেলে নিয়ে এসেছেন খাদিজা আক্তার। যাবেন পিরোজপুর। বলছিলেন সেখানে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা ও শ্বশুর শাশুড়ি। ঈদ আনন্দটা ভাগাভাগি করতেই তাদের বাড়ি যাওয়া। পাশাপাশি কোরবানির একটা ব্যাপার-স্যাপার তো আছেই।
চাঁদপুরগামী লঞ্চ সোনার তরী-১-এর স্টাফ জালাল উদ্দীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চাঁদপুরে আধা ঘণ্টা পর পর লঞ্চ যায়। ডেকে আগের মতো অর্ধেক যাত্রী নেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে কিছু যাত্রী তো বেশি উঠবেই। কিন্তু ভাড়া আমরা সঠিকটাই নেব।’
এম ভি রাসেল-৩-এর মাস্টার আজাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের লঞ্চ বিকেলে যাবে। ভিড় একটু তো হবেই। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সতর্ক থাকা হবে।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন নিউজবাংলাকে বলেন, মধ্যরাতে একটি লঞ্চ চাঁদপুর ছেড়ে গেছে। সকাল ৬টা থেকে প্রতিনিয়ত চাঁদপুর রুটে স্বাভাবিকভাবে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, সুরেশ্বর ওয়াপদায় একটি লঞ্চ সকাল ৭টার কিছু পর রওনা দেয়। এরপর ৮টার দিকে ইলিশা এবং বরিশালের দিকে জাহাজ যায়। সব লঞ্চ সাধারণত বিকেলের দিকে ছেড়ে যায়।
বিআইডব্লিউটিএর এই কর্মকর্তা আরও জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছে। মাস্ক ব্যতীত কাউকে টার্মিনালে ঢুকতে দেয়া হবে না। ভাড়ার ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে মঙ্গলবার বিআইডব্লিউটিএ এক প্রজ্ঞাপনে জানায়, বুধবার মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করবে। ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী নৌযান পুনরায় চলাচল বন্ধ থাকবে। এ নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণের মধ্যেও কোরবানি ঈদ ও পশুর হাট বিবেচনায় নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে আট দিনের জন্য শাটডাউন শিথিলের ঘোষণা দেয় সরকার।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঈদের সময় অর্থাৎ এই আট দিনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এক আসন ফাঁকা রেখে চলবে সব গণপরিবহন। খুলে দেয়া হবে দোকানপাট, শপিং মল। তবে ঈদের পর আবারও ১৪ দিনের জন্য শাটডাউনে যাবে দেশ।
শিথিল লকডাউনের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে বাসসহ সব ধরনের গণপরিবহন।