বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তিন দিন আগেই হাটে গরু, দামও চড়া

  •    
  • ১৪ জুলাই, ২০২১ ১৯:৫৭

কোরবানির পশুর হাটের স্থানগুলোতে বুধবার দেখা যায়, সড়কের পাশে হাটের সামনের দিকে তেমন পশু না থাকলেও হাটের শেষ প্রান্তের দিকে এরই মধ্যে পশু উঠেছে। কেনাবেচা তেমন শুরু না হলেও দেখা যায় দর্শনার্থীদের ভিড়।

নগর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কোরবানির ১৭ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত চলবে পশু বেচাকেনা। এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগেই রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে বসে গেছে কোরবানির পশুর হাট। তবে কেনাবেচা এখনও শুরু হয়নি। চড়া দাম চাইছেন পাইকাররা।

এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় মোট ১৯টি অস্থায়ী হাট বসবে। এর বাইরে উত্তরে স্থায়ী হাট গাবতলীতে এবং দক্ষিণের স্থায়ী হাট সারুলিয়ায়ও পশু বেচাকেনা চলবে। পশু কেনা চলবে অনলাইন হাটেও। এ বিষয়ে ডিএনসিসির নিজস্ব উদ্যোগও রয়েছে।

হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে কঠোর নজরদারি থাকবে বলে জানিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। আগামী ২১ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানি ঈদ উদযাপিত হবে।

কোরবানির পশুর হাটের স্থানগুলোতে বুধবার দেখা যায়, সড়কের পাশে হাটের সামনের দিকে তেমন পশু না থাকলেও হাটের শেষ প্রান্তের দিকে এরই মধ্যে পশু উঠেছে। কেনাবেচা তেমন শুরু না হলেও দেখা যায় দর্শনার্থীদের ভিড়।

দুপুরে মেরাদিয়া হাটে দেখা যায়, সড়কের পাশের মূল হাটটি একেবারেই ফাঁকা। অপর প্রান্তে উত্তরাঞ্চলের কয়েক জেলা থেকে ব্যাপারীরা তাদের গরু এনে রেখেছেন। একই চিত্র বনশ্রী, আফতাবনগর, ধূপখোলা মাঠ, শাহজাহানপুর, ধলপুর, কাজলা-কুতুবখালীসহ অন্যান্য হাটেও।

ব্যাপারীরা বলছেন, এবার কোরবানির ঈদ নিয়ে তারা চিন্তায় আছেন। কেমন বেচাকেনা হবে বুঝতে পারছেন না। তাই আগে থেকেই পশু নিয়ে এসেছেন। তবে ইজারাদারা মূল হাটে পশু নিতে দিচ্ছেন না।

তাই আশপাশেই পছন্দমতো স্থানে পশু রাখছেন ব্যাপারীরা। এতে ক্রেতার নজরে পড়ে। দ্রুত বিক্রিও হয়। প্রথম দফায় আনা পশু দ্রুত বিক্রি করে আরও কিছু পশু আনার চিন্তাও করছেন ব্যাপারীরা। এসব গরুর মধ্যে মাঝারি আকারের দেশি গরু এবং শাহিওয়াল-দেশি গরুর সংকর জাতই বেশি।

মেরাদিয়া হাটে মেহেরপুর থেকে আসা ব্যাপারী আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘তিনজন মিলে ১৩টি ষাঁড় গরু নিয়া আসছি। এবার লকডাউন থাকায় এলাকায় হাট বসে নাই। গরুও বিক্রিও করতে পারি নাই। তাই আগেভাগে নিজের গরু আসছি। প্রতিবছরই মেরাদিয়া হাটে গরু আনি।’

দাম কেমন, জিজ্ঞেস করলে নিজের মাঝারি আকারের গরু দেখিয়ে বলেন, ‘এতে ৫ মণ মাংস হবে। ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দাম চাইছি। ঢাকা-চিটাগাংয়ের ব্যাপারীরা এবার গ্রাম থেকে ম্যালা গরু নিয়া আসছে। তাই বেশি দামে কিনতে হইছে। তিন মাস খাওয়া-খাটনি মিলে অনেক দাম পড়ছে। খরচাপাতি বাদ দিয়া গরুপ্রতি ১০ হাজার টাকা লাভ করতি পারলে হবে। বেশি লাগবি না।’

হাটের পাশেই একটি বাড়ির মালিক আবু লায়েস ছেলেকে নিয়ে হাটে আসেন গরুর দাম দেখতে। একটি গরু দেখে পছন্দ হয়। বিক্রেতা রেজাউল সাত মণ মাংস হবে দাবি করে একটি ষাঁড়ের দাম চাইলেন ২ লাখ টাকা।

তবে লায়েস বলেন, ‘এই গরুতে ৫ মণের বেশি গোস্ত হবে না। বড়জোর দাম হবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। দাম তো দ্বিগুণ চাইছে। প্রতি কেজির দাম তো হাজার টাকা পড়বে। তবে এখনই কিনব না। আরও দেখি।’

বিক্রেতা রেজাউল বলেন, ‘চার মাস ধইরে তিনটি গরু পালছি। একেকটার পিছে লাখ টাকার বেশি খরচই পড়ছে। ট্রাক ভাড়াও লাগছে। দেখতেও মাশাল্লা ভালো। এমন গরু কমই আছে।’

হাট বসার আগে গরু আনলেন কেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে গরু নামছে। আগামীকাল তো বাস-ট্রাক সব খুলছে। রোডে ম্যালা জ্যাম লাগব। তাই অগেই গরু নিয়ে আসছি। নাইলে তো পথে বসি থাকতি হবে।’

স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে পশুর হাটে এসেছেন বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব আশরাফ হোসেন। অবসরপ্রাপ্ত এই সরকারি কর্মকর্তা ব্যাপারীর কাছে একটি দেশি জাতের গরুর দাম শুনে খেপে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘বড়জোর আড়াই মণের মতো মাংস হবে, এমন ছোট একটা গরুর দাম চাইছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। কেজি হিসাবে কিনলেও ৫০ হাজার টাকার মতো হবে। ৬৫ হাজার টাকা কইলাম দিল না। ওর হিসাবে তো কেজি ১২০০ টাকার বেশি পড়ে।’

আগেভাগেই পশুর হাট বসেছে ধূপখোলা মাঠে। ছবি: নিউজবাংলা

কুষ্টিয়া থেকে আসা ব্যাপারী আসিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার কোরবানিতে দেশি ছোট জাতের গরুর চাহিদা বেশি। তাই কেনাও পড়ছে বেশি। দেশি জাতের ১৯টি গরু আনছি। গৃহস্তের কাছ থাইকা মণে ২৬ থেকে ২৮ হাজার টাকা পড়ছে। তার ওপর অন্য খরচ তো আছে। আড়াই-তিন মণের গরু ৮০ থেকে ৮৫ হাজারের কমে বেচলে পকেট খরচও উঠব না।’

এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, ঈদুল আজহার দিনসহ মোট পাঁচ দিন স্থায়ী ও অস্থায়ী ২১ হাটে পশু কেনাবেচা করা যাবে। স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্য শর্তাবলি মানা সাপেক্ষে অস্থায়ী পশুর হাট ইজারাপ্রাপ্তদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করলে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসব বাজারে পশু ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ করতে হবে।

প্রতিটি হাটে প্রয়োজনীয় সিসি ক্যামেরা এবং তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা থাকবে। হাট শুরু আগের দুই দিন প্রস্তুতির সময় পাবে ইজারাদাররা।

উত্তর সিটির হাট

ডিএনসিসি এলাকায় একমাত্র স্থায়ী হাট হচ্ছে গাবতলীর পশুর হাট। অস্থায়ী হাটের মধ্যে রয়েছে উত্তরখান মৈনারটেক হাউজিং (আবাসিক) প্রকল্পের খালি জায়গা; বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের (আফতাবনগর) ব্লক-ই, সেকশন-৩-এর খালি জায়গা; ভাটারা (সাইদনগর) অস্থায়ী পশুর হাট; খিলক্ষেতের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজসংলগ্ন মস্তুল ডুমনী বাজারমুখী রাস্তার দুই পাশ্বের্র খালি জায়গা; ডিএনসিসি ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন ৩০০ ফুট সড়কের উত্তর পাশের সালাম স্টিল লিমিটেড ও যমুনা হাউজিং কোম্পানি এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন খালি জায়গা; কাওলা শিয়ালডাঙ্গাসংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় অবস্থিত বৃন্দাবন হতে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা; মোহাম্মদপুর বছিলায় ৪০ ফুট সড়কসংলগ্ন রাজধানী হাউজিং, স্বপ্নধারা হাউজিং ও বছিলা গার্ডেন সিটির খালি জায়গা।

দক্ষিণ সিটির হাট

দক্ষিণ সিটিতে ১০টি অস্থায়ী হাটগুলো হলো আফতাবনগর (ইস্টার্ন হাউজিং) ব্লক এফ, জি, এইচ সেকশন ১ ও ২-এর খালি জায়গা; গোলাপবাগস্থ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মার্কেটের পেছনের খালি জায়গা, হাজারীবাগ এলাকার ইনস্টিটিউট অফ লেদার টেকনোলজি মাঠসংলগ্ন খালি জায়গা, পোস্তগোলা শ্মশানঘাটসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনালসংলগ্ন উন্মুক্ত জায়গা, উত্তর শাহজানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধূপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা এবং লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা।

এ বিভাগের আরো খবর