ব্রাজিলের মারাকানায় হয়েছে কোপা আমেরিকার ফাইনাল। আর তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের চলমান শাটডাউনে।
খেলা শেষের রোববার সকালে রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় দেখা যায় মানুষের ভিড়। তবে অন্যদিনের তুলনায় প্রধান সড়কে কম ছিল ব্যক্তিগত যানবাহন।
বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় শুরু হয় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ম্যাচ। কোপার ফাইনালে ১-০ গোলে শিরোপা জিতে নেয় আর্জেন্টিনা।
টেলিভিশনে খেলা দেখে বিজয়ী ও পরাজিত দলের সমর্থকরা বের হন রাস্তায়। ব্রাজিল সমর্থকরা প্রিয় দলের ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করছেন বিভিন্ন স্থানে জমায়েত হয়ে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা সমর্থকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে কোথাও কোথাও স্লোগান ধরেছেন।
প্রধান প্রধান সড়কের চেকপোস্টে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরাও অনেকে আলাপ করছেন ফুটবল ম্যাচের ফলাফল ও খেলার বিশেষ মুহূর্তগুলো নিয়ে।
শাটডাউনে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে মানা করা হলেও নগরীর কোথাও কোথাও সকালে দেখা গেছে অনেককে ফুটবল খেলতে। দুই দলের সমর্থকরা নিজেরাই ফুটবল খেলায় মেতেছেন। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনায় ভাগ হয়ে তারা খেলেছেন মাঠ ছাড়াও গলিপথে।
সকাল থেকে রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় শাটডাউনের নির্দেশনা না মেনে ফুটবল সমর্থকদের বাইরে চলাচল করতে দেখা যায়। অনেক মানুষের গায়ে দেখা গেছে প্রিয় দলের জার্সি।
রামপুরা বিটিভি সেন্টার সংলগ্ন চেকপোস্টে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মোজাম্মেল হক জানান, রোববার সরকারি-বেসরকারি অফিস খোলা রয়েছে। এর বাইরে যাদের জরুরি প্রয়োজন তারাই সড়কে বের হচ্ছেন।
গত কয়েকদিনে সকাল ১০টা নাগাদ অন্তত ৮ থেকে ১০টি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে এই চেকপোস্টে। কিন্তু রোববার সকালে একটি মামলাও দিতে হয়নি।
মাত্র একটি মোটরসাইকেল আটকে রাখা হয়েছে। চালক রাইড শেয়ার করছিলেন। এ জন্য তাকে আটকে দেয়া হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান ও খেলার প্রভাবে প্রধান সড়কগুলোতে সকালে ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা তুলনামূলক কম বলে মনে করেন সার্জেন্ট মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, ‘অনেকে রাত জেগে থেকে সকালে খেলা দেখে ঘুমিয়েছে। যারা খেলা দেখা শেষে বাইরে বেরিয়েছে, তারা মূল সড়কে কম আসছে। উল্লাস করে কয়েকটি গাড়ি চালিয়ে চেক পোস্টের দিকে আসতে দেখা গেছে মাঝেমধ্যে।
‘তবে চেকপোস্ট দেখে উল্টো ঘুরে চলে গেছে তারা। চেকপোস্ট ধরা পড়ার ভয়ে অনেকে এলাকার গলিতে সীমাবদ্ধ থাকছে।’
সকাল ১০টার পর চায়ের দোকান ঘিরে বেশ কিছু কিশোর যুবকদের আড্ডা দেখা গেছে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায়। খিলগাঁও তালতলা মার্কেট সংলগ্ন গলিতে ছোট ছোট জটলা দেখা যায়।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাতভর জেগে থেকে গল্প-আড্ডায় মেতেছিলেন বন্ধুরা। সকালে একসঙ্গে খেলা দেখেছেন। কিছু খেয়ে বাসায় ফিরবেন বলে বাসার বাইরে এসেছেন। চা চক্র শেষে যে যার বাসায় ফিরবেন।
রিয়াদ নামের এক তরুণ বলেন, ‘কোপা কাপ শুরুর পর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে নিজের দল নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলত। কালকে রাতে আমাদের বাসায় পাঁচজন বন্ধু একসঙ্গে ছিলাম। সবাই মিলে গল্প করেছি, মুভি দেখছি, একজন অবশ্য ঘুমিয়ে পড়ছিল।
‘সে খেলা শুরুর আগে উঠছে। আমার দল ছিল আর্জেন্টিনা। সকালে নাস্তা করানোর বাজি ছিল। এখন চা খেয়ে বাসায় যাব।’
ফুটবলপ্রেমীরা শুধু আড্ডা-খুনসুটিতে সীমাবদ্ধ ছিলেন না। কোপা ফাইনাল শেষে নিজেরাই ফুটবল নিয়ে মাঠে নেমেছেন। খিলগাঁও উচ্চবিদ্যালয় সংলগ্ন খেলার মাঠে শতাধিক কিশোর একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে খেলছেন। অধিকাংশের গায়ে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার জার্সি।