রাজধানীতে শাটডাউনের প্রথম দিন থেকে নবম দিন পর্যন্ত বিধিনিষেধ অমান্য করার অভিযোগে ৫ হাজার ৮৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয় ১ কোটি ৫৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮৩২ টাকা।
ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম ৯ দিনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার ও জরিমানার বিষয় জানান।
বিধিনিষেধ অমান্য করায় প্রথম দিন গ্রেপ্তার হয় ৫৫০ জন। এ সময় বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ৯২ হাজার ৫০৭ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ট্রাফিক পুলিশ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করে।
শাটডাউনের দ্বিতীয় দিন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে ২০৮ জনকে। এ ছাড়া, ট্রাফিক পুলিশ ২১৯টি গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এসব মামলায় জরিমানা করা হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা।
ডিএমপির অর্ডিন্যান্সে ৩২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরীর ট্রাফিক পুলিশের ৮টি বিভাগে ৬৮ গাড়ি চালককে জরিমানা করা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৯০০ টাকা।
শাটডাউনের দ্বিতীয় দিনে ডিএমপি ট্রাফিক পুলিশ ২১৯টি গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলা
তৃতীয় দিনের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে জরিমানা করা হয়েছে ১৯ লাখ ২২ হাজার ৫৫০ টাকা। গ্রেপ্তার করা হয় ৬২১ জনকে। মোবাইল কোর্টে ৩৪৬ জনকে ১ লাখ ৬ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করা হয়।
চতুর্থ দিনে ডিএমপি গ্রেপ্তার করে ৬১৮ জনকে। মোবাইল কোর্টে ১৬১ জনকে ৫৪ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ডিএমপি ট্রাফিক ৪৯৬টি গাড়ি ও চালককে ১২ লাখ ৮১ হাজার টাকা জরিমানা করে।
পঞ্চম দিনে ডিএমপি গ্রেপ্তার করে ৫০৯ জনকে। মোবাইল কোর্টে ২৮৭ জনকে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়। ডিএমপি ট্রাফিক ৫২৬টি গাড়ি ও চালককে ১২ লাখ ২৩ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করে।
ষষ্ঠ দিনে ডিএমপি গ্রেপ্তার ৪৬৭ জনকে। মোবাইল কোর্টে ৩০৫ জনকে ২২,৭৪৮০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ডিএমপি ট্রাফিক ১০৮৭ টি গাড়ি ও চালককে ২৫ লাখ ২৯ হাজার ২৫ টাকা জরিমানা করে।
সপ্তম দিনে ডিএমপি গ্রেপ্তার করে ১১০২ জনকে। এই দিনেই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গ্রেপ্তার হয়। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২৪৫ জনকে ১ লাখ ৭১ হাজার ৯৮০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ডিএমপি ট্রাফিক ৮০৪ টি গাড়িকে ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করে।
অষ্টম দিনে ডিএমপি গ্রেপ্তার করে ১০৭৭ জনকে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৩১৮ জনকে ১৬ লাখ ৭৯০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় ডিএমপি ট্রাফিক ৯৩৭ টি গাড়ি ও চালককে ২১ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০টাকা জরিমানা করে।
নবম দিনে ডিএমপি গ্রেপ্তার ৫৮৫ জনকে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১২৯ জনকে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় ডিএমপি ট্রাফিক ৪১৪ টি গাড়ি ও চালককে ৮ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করে।
শাটডাউন শুরুর আগের দিন বুধবার মাঠ পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের কঠোর অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেন আইজিপি বেনজীর আহমেদ।
ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘কেউ অকারণে বের হলে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব, প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ব্যবস্থা নেব। অকারণে বের হলেই আইনি ঝামেলায় পড়তে হবে। যানবাহন ব্যবহার করলে মোটরযান আইনে ব্যবস্থা নেব।’
বৃহস্পতিবার থেকে সাত দিনের শাটডাউন বাস্তবায়নে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই শাটডাউন আরও সাত দিন বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। এর আগেরবার করোনা নিয়ন্ত্রণে কঠোর বিধিনিষেধ চালু থাকার সময়ও সেনাবাহিনী নামানো হয়েছিল।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ৩০ জুন জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ে কার্যকর টহল নিশ্চিত করতে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়ন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।’