মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে বেড়িবাঁধ রাস্তা দিয়ে গাবতলীর দিকে একটু এগোতেই প্রধান সড়কে চোখে পড়ে সাদেক অ্যাগ্রোর বিশাল গেট।
সাদেক অ্যাগ্রোর ভেতরে গিয়ে দেখা যায় নানা প্রজাতির বড় বড় গরু। কোরবানি সামনে রেখে প্রস্তুতি চলছে। কাজ করছে বহু মানুষ। কেউ খাবার প্রস্তুত করছেন, কেউ খাবার দিচ্ছেন, কেউ বর্জ্য পরিষ্কার করছেন।
এখানে নিয়োজিত কর্মীরা জানান, এই খামারের পাশে একটু দূরে তাদের আরেকটি খামার আছে। এ ছাড়া দেশের কয়েকটি জেলায়ও তাদের খামার রয়েছে। তাদের খামারের গরু হাটে নেয়া হয় না। খামার থেকেই কিনে নিয়ে যান ক্রেতারা।
খামারের ম্যানেজার সুমন খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ফার্ম তো নামকরা আপনারা জানেন। আমাদের এখানেই সবাই আসেন। ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের একটা পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। আমরা গরু কোনো হাটেই নিই না। এখান থেকেই বিক্রি করি।
‘গমের ভুসি, খৈল, কালোজিরা, খড়, ঘাস খাওয়াই। আমরা কোনো ওষুধ ব্যবহার করি না। যা খাওয়াই সব ন্যাচারাল।’
ক্রেতার বাসায় গরু ফ্রি পৌঁছে দেয়া হয়। ছবি: নিউজবাংলা
আপনারা কি অনলাইনে বিক্রি করেন, এমন প্রশ্নে সুমন বলেন, ‘অনলাইনেও আমরা বিক্রি করি। ২০০ থেকে ৪০০ কেজি ওজনের গরু ৪২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করি। যেগুলো বড় ৬০০ কেজির ওপরে, সেগুলো কেজি হিসেবে না পিস হিসেবে বিক্রি করি।’
ক্রেতাদের কী ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকেন আপনারা, জানতে চাইলে ম্যানেজার সুমন বলেন, ‘আমরা কোনো ডেলিভারি চার্জ নিই না। ক্রেতার বাসায় আমরা ফ্রিতেই পৌঁছে দিই। সঙ্গে আমরা এক-দুই দিনের খাবারও দিয়ে দিই।’
পশু কোরবানি দিয়ে বাসায় মাংস পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থাও আছে এখানে। তবে সে ক্ষেত্রে টাকা বাড়িয়ে নেয়া হয়। মালিকের উপস্থিতিতে পশু কোরবানি দিয়ে মাংস বুঝিয়ে দেয়া হয়।
সুমন খান বলেন, ‘ক্রেতারা যদি এখান থেকে কোরবানি দিয়ে মাংস নিয়ে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে আমারা পারসেনটেজ নিয়ে থাকি। গরু বুঝে ১৫ থেকে ২০ পারসেন্টেন্স এক্সট্রা টাকা নেয়া হয়। যিনি ক্রেতা তার লোক থাকবে, তার সামনেই কোরবানি দিয়ে মাংস বানিয়ে আমরা ফ্রি ডেলিভারি দেব।’
খামারের পশুর সংখ্যা, ধরন ও দাম জানতে চাইলে সুমন বলেন, ‘দুই খামার মিলিয়ে টোটাল আড়াই হাজারের মতো গরু আছে আমাদের। পাবনার দেশাল ষাঁড় আছে, ইন্ডিয়ান ষাঁড়, ব্রাহমা গরুসহ অনেক ধরনের গরু আছে। ব্রাহমা গরু আছে ৩৫টার মতো। গরুর পাশাপাশি উট, দুম্বা, বিটেল ছাগলও আছে। দেড় শর মতো বিদেশি ছাগল আছে। ৩০টার মতো দুম্বা আছে। দুইটা উট আছে, তার একটা বিক্রি হয়ে গেছে। দুই লাখ টাকার নিচে আমাদের এখানে কোনো গরু নাই। সবচেয়ে দামিটির মূল্য ২৫ লাখ টাকা।’
তবে খামারের বর্জ্য ফেলতে দেখা যায় পাশের খালে। খালটি ময়লা-আবর্জনায় প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। খামারের ময়লা পানিও যাচ্ছে এই খালে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে খামারের কর্তৃপক্ষ কোনো সদুত্তর দেয়নি।