১৪ বছর আগে নোয়াখালীর সুধারাম উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের ৯ বছরের শিশু আরাফাত হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে একমাত্র আসামি মো. জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রেখেছে সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
আসামি পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন এবিএম বায়েজীদ। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
চুড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার ফলে নিয়ম অনুযায়ী রায় প্রকাশের পর আসামি মো. জাহাঙ্গীরের মৃত্যু পরোয়ানা জারি হবে।
পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ হিসেবে আপিলের পূর্নাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রিভিউ করার সুযোগ থাকবে। তবে রিভিউ খারিজ হলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা থাকবে না।
তবে সবশেষ পথ হিসেবে আসামি দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার সুযোগ পাবেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় সুধারাম উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের শিশু আরাফাত হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর পাশের কবরস্থানে ফেলে রাখেন আসামি মো. জাহাঙ্গীর।
আরাফাত একই জেলার মাইজদী নুরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র ছিল। এই হত্যার ঘটনায় নিহতের পিতা বাবুল খান ১৫ মার্চ মামলা করেন। ১৮ মার্চ হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন জাহাঙ্গীর।
জবানবন্দীতে আসামি জানায়, নিহত আরাফাতের পিতার কাছে তারা (জাহাঙ্গীর) জমি বিক্রি করে। এই জমির টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে আরাফাতকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ মামলায় বিচার শেষে নোয়াখালীর আদালত ২০০৮ সালের ২৮ জুলাই মো. জাহাঙ্গীরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
এরপর মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের জন্য নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। একইসঙ্গে কারাবন্দী আসামি আপিল করে। উভয় আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্ট রায় দেয়।
এরপর আসামি কারাগারে থেকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। ওই আপিলের শুনানি শেষে আজকে এ রায় দেয়া হয়।