লকডাউনকে পুঁজি করে ইয়াবা ট্যাবলেটের হোম ডেলভারি করে আসছিলেন অনিক হাসান বা হিরো অনিক ও তার সহযোগীরা। সোমবার তাকে আটক করেছে র্যাব-৩।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এর আগে, সোমবার রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে টিকটক হৃদয় বাবুর অন্যতম সহযোগী ও মগবাজারের চিহ্নিত সন্ত্রাসী অনিক হাসান বা হিরো অনিকসহ ৫ জনকে আটক করে র্যাব-৩। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি, ১টি ম্যাগাজিন, ৫টি ধারালো অস্ত্র, ১টি চেইন, ৩০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৭টি মোবাইল ফোন ও ৩ হাজার ৪০০ টাকা জব্দ করা হয়।
আটক বাকি আসামীরা হলো—শহিদুল ইসলাম ওরফে এ্যাম্পুল, আবির আহমেদ রাকিব, সোহাগ হোসেন আরিফ ও মো. হিরা।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘হিরো অনিক ইয়াবা ট্যাবলেটের কারবার করতেন। এছাড়াও তিনি হাতিরঝিল এলাকায় তার সহযোগীদের নিয়ে ঘুরতে আসা মানুষ ও পথচারীদের আটকে ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেন। হিরো অনিকসহ আটক সহযোগীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই হত্যা ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ইতিপূর্বে গ্রেপ্তার হয়েছিল। লকডাউনকে পুঁজি করে ইয়াবা ট্যাবলেটের হোম ডেলভারি করে আসছিলেন হিরো অনিক।
তিনি বলেন, ‘ভারতে কেরালায় নারী পাচারের ঘটনায় স্থানীয় পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া টিকটক হৃদয় বাবুর সঙ্গেও হিরো অনিকের সখ্যতা ছিল। হৃদয়বাবুকে বিভিন্ন সময় তিনি সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সহযোগিতা করতেন। এছাড়াও হৃদয় বাবুকে তিনি ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক সরবরাহ করতো বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।’
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক হিরো অনিক জানায়, রাজধানীর মগবাজার, হাতিরঝিল ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারী সিন্ডিকেট হোতা হিসেবে পরিচিত তিনি। তার নামে হত্যা মামলা, মাদক, অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ ৯টি মামলা রয়েছে। তার একটি গ্রুপ রয়েছে, যেখানে ২০-২৫ জন সদস্য রয়েছে। কিশোর বয়সেই তিনি অপরাধের সঙ্গে জড়িত হয়।
তিনি বলেন, ‘তিনি ২০১৬ সালে আলোচিত আরিফ হত্যা মামলার আসামী হিসেবে হিরো অনিক পরিচিতি পায়৷ হিরো অনিক মগবাজার, মধুবাগ, মীরবাগ, নতুন রাস্তা, পেয়ারাবাগ, চেয়ারম্যান গলি, আমবাগান, ও হাতিরঝিল এলাকায় আধিপত্য বিস্তার মাদকের কারবার করতেন।’
তিনি বলেন, ‘হিরো অনিকের সহযোগীদের কারও কোনো পেশা নেই। তারা হিরো অনিকের নের্তৃত্বে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতো। শহিদুল ওরফে এম্পুলের নামে মাদক ও চুরির ৬টি মামলা, আবিরে বিরুদ্ধে ২টি মামলা, সোহাগের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু অপহরণ, মাদক ও ডাকাতির ৩টি মামলা, এবং হিরার বিরুদ্ধে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত ও চুরির ১টি মামলা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা হিরো অনিক সিন্ডিকেটের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের অভিযান পরিচালনা করছি। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’