বখাটে যুবক কৌশলে সম্পর্ক গড়েছিল স্কুলছাত্রীর সঙ্গে। এরপর ছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। সে ভিডিও দিয়েই ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছিল কিশোরীকে। ঘটনা জানাজানি হলে পারিবারিক চাপ তৈরি হয়। এরই সুবাদে রোববার গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে কিশোরী।
মর্মান্তিক ঘটনাটি রাজধানীর বাসাবো এলাকার। নানির বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছিল কিশোরী।
আত্মহত্যার ঘটনার পর কিশোরীর বাবা সোমবার সকালে সবুজবাগ থানায় একটি মামলা করেন। স্থানীয় দুই যুবক শামীম ও ফাহিমের বিরুদ্ধে এজাহারে অভিযোগ আনা হয়েছে পর্নোগ্রাফি ও আত্মহত্যা প্ররোচনার।
সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরাদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা রোববার শুধু আত্মহত্যার বিষয়টি শুনেছিলাম। মেয়েটির পরিবার তখন অভিযোগ করেননি। সোমবার তারা দুই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এবং আপত্তিকর ভিডিওর কথা জানান।’
ওসি আরও বলেন, ‘সব শুনে মামলা করতে বলেছি। ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে। আমরা সবকিছু তদন্ত করে দেখব।’
মামলার এজাহার ও স্বজনদের মাধ্যমে জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যায় নানির বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিশোরী। তাকে অসুস্থ অবস্থায় নেয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিছুক্ষণ পরই কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে স্কুলছাত্রীর বাবা জানান, যাত্রাবাড়ী এলাকায় তারা বসবাস করেন। মেয়ের স্কুলে যাতায়াতের সুবিধা বিবেচনায় তাকে রাখা হয়েছিল বাসাবোতে নানার বাড়িতে।
যাত্রাবাড়ী এলাকার দুই যুবক শামীম ও ফাহিম কৌশলে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেছিল কিশোরীর। এরপর তারা ২০ হাজার টাকা দাবি করেছিল। টাকা না পেলে কিশোরীর ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় তারা।
স্কুলছাত্রী একপর্যায়ে যুবকদের ৩ হাজার টাকা দিয়ে ভিডিও মুছে ফেলার অনুরোধ জানায়। কিন্তু যুবকরা আপত্তিকর ভিডিওটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ঘটনা জানাজানি হলে রোববার সকালে স্কুলছাত্রীর মা বাসাবোতে আসেন। তিনি বকাঝকা করে মেয়েকে নানিবাড়িতেই রেখে যান। এরপর সন্ধ্যায় তার আত্মহত্যার সংবাদ পান স্বজনরা।
যাত্রাবাড়ী এলাকায় কিশোরীর বাবার রিকশার গ্যারেজ আছে। মা ক্লিনার হিসেবে কাজ করেন সিটি করপোরেশনে। আরেক মেয়েসহ এ দম্পতি ধলপুর বস্তিতে থাকেন।
কিশোরীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে।