মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রোববার ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে ঢাকা ও আশপাশের এলাকাগুলোতে। বৃষ্টিপাতের পর রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে জলাবদ্ধতা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, ধানমন্ডি, জিগাতলা, শংকর, পল্টন, উত্তরার বিভিন্ন স্থান, মিরপুর, দক্ষিণখান, উত্তরখান, খিলক্ষেত নামাপাড়া, নর্দা, পুরান ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে জলাবদ্ধতার এই চিত্র।
সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউজুড়ে ছিল পানি। পথচারীদের এই পানি পার হয়ে যেতে হয়েছে। সংসদ ভবনের প্রবেশপথের সড়কেও জমে পানি।
এ ছাড়া ধানমন্ডি-২৭ নম্বরের প্রধান সড়কে দীর্ঘ এলাকাজুড়ে ছিল পানি থৈ থৈ।
সেখানে কথা হয় পথচারী রেয়াজুল ইসলামের সঙ্গে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমার বাসা ধানমন্ডি। বিশেষ কারণে ঘর থেকে বের হয়ে ধানমন্ডি-২৭ হয়ে ফার্মগেট যাচ্ছি। রাস্তায় পানি। তাই রিকশায় যাতায়াত করতে হচ্ছে।
‘ধানমন্ডি-২৭-এর পানি কোনো মতে পার হয়ে সংসদ ভবনের দিকে এসেও দেখি সংসদ ভবনের সামনে পানি। রাস্তায় তো ফুটাফাটা থাকে। পড়ে যাই কি না, তাই ভয়ে ভয়ে যাচ্ছি। একটু বৃষ্টি হলেই এখানে রাস্তায় পানি জমে।’
ধানমন্ডির ২৭ নম্বর সড়কে রোববার সকালে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। ছবি: পিয়াস বিশ্বাসএকটু এগিয়ে ফার্মগেট এসেও একই রকম পানি সড়কে জমে থাকতে দেখা গেছে। ফার্মগেট থেকে কারওয়ান বাজারের দিকে এগিয়ে প্রায় পুরোটাজুড়েই সড়ক পানিতে ডোবা ছিল।
শফিক মিয়া নামের এক পথচারী বলেন, ‘কারওয়ান বাজার এসেছিলাম বাজার করতে। আমার বাসা ফার্মগেট। ভেতরের রাস্তায় পানি। তাই ভাবলাম মেইন রাস্তা দিয়ে যাই। মেইন রাস্তায় এসেও দেখি পানিতে ডোবা।’
পানিবন্দি দেখা গেছে রাজধানীর খিলক্ষেত নামাপাড়া, নর্দা, উত্তরখান, দক্ষিণখান এলাকাতেও।
সেসব এলাকায় গলিগুলোতে যে কয়েকজন মানুষ বের হয়েছেন, সবাইকে হাঁটু বা কোমর পানির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। অনেকেই রিকশায় গেলেও রিকশার পাটাতন পর্যন্ত পানি উঠেছে।
ধানমন্ডির ২৭ নম্বর সড়কে রোববার সকালে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। ছবি: পিয়াস বিশ্বাসদক্ষিণখানের বাসিন্দা বেলাল মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৃষ্টি হয়েছে বেশ কিছু আগে। তারপর থেকেই এই সড়কে পানি। পানি নামার পাইপ সরু। তাই পানি কখন নামবে বলা যাচ্ছে না। একটু বৃষ্টি হলেই এই সড়কে পানি জমে।’
সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই দেখা যায় বৃষ্টির পানি মাংসের দোকানে ঢুকে পড়ায় বিক্রেতা ভ্যানে করে মাংস নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এমন ভারী বৃষ্টি রোববার দেশের বিভিন্ন স্থানে অব্যাহত থাকতে পারে। তাই নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখিয়ে চলাচলা করতে বলা হয়েছে।
জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের সড়কে বৃষ্টিতে জমেছিল পানি। ছবি: পিয়াস বিশ্বাসআবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে অসম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায়।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গা এবং ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।