মেয়েটির বয়স ১২। বাড়ি কিশোরগঞ্জ মিঠামইন। অভাবের তাড়নায় বাবা-মা তাকে রাজধানীর তোপখানা রোডে একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দিতে বাধ্য হন।
সেখানে সে নয় মাস ধরে কাজ করছে। প্রায় প্রতিদিনই নানা অজুহাতে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী শিশুটিকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তাদের এক প্রতিবেশী নির্যাতনের আঘাতের চিহ্নসহ শিশুটির কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। শনিবার রাতে ছবিগুলো পোস্ট করে তিনি দ্রুত সহযোগিতা ও আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন জানান।
ছবিতে মেয়েটির চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন। হাতে গুরুতর জখম এবং অপর একটি ছবিতে মেয়েটির পশ্চাৎদেশে উভয়পাশে আগুনে পোড়া ঘা চোখে পড়ে। এই দৃশ্য যে কারো বিবেককে নাড়া দিতে বাধ্য। এই পোস্টটি একুশে টিভির এক সংবাদকর্মীর চোখে পড়লে তিনি তা বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে পাঠিয়ে দ্রুত সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করেন।
ঘটনাস্থল কোন থানার অধীনে তা তাৎক্ষনিকভাবে নিশ্চিত না হওয়ায় মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম এবং শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদারকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়।
আটক গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স) সোহেল রানা বলেন, দুই থানা থেকেই দ্রুতগতিতে ঘটনাস্থলের দিকে একটি করে টিম ছুটে যায়। পরবর্তীতে জানা যায়, ঘটনাস্থলটি শাহবাগ থানার অধীনে। এরপর শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদারের তাৎক্ষণিক তৎপরতায় শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন্স কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে এসআই জাহাঙ্গীর আলমসহ পুলিশের একটি টিম মেয়েটিকে উদ্ধার করে। একই সঙ্গে নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত স্বামী তানভির আহসান এবং স্ত্রী এডভোকেট নাহিদকে আটক করে।
তিনি আরও বলেন, ফেসবুকে দেয়া পোস্টের মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে এবং বিষয়টি পুলিশের নজরে আসার মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধার ও অভিযুক্তদেরকে আটক করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এই বিষয়টি কোনো এক সচেতন নাগরিক ৯৯৯ কেও ফোন করে জানান। পরবর্তীতে ৯৯৯ থেকেও থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।