শাটডাউন নামে পরিচিতি পাওয়া কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে এসে আটক প্রায় ছয়শ মানুষকে জরিমানা করে ছেড়ে দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার রাতে হাজতবাসের পর শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন থানা থেকে আটকদেরকে তোলা হয় ঢাকার মুখ্যমহানগর হাকিম আদালতে।
শুক্রবার দুপুরের পর শুনানি শুরু হয় হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে।
আটকদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ আনে দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারায়।
এই ধারায় বলা আছে, ‘যে ব্যক্তি বেআইনিভাবে বা অবহেলাজনিত এমন কোনো কাজ করে যার কারণে জীবন বিপন্নকারী কোনো রোগের সংক্রমণ বিস্তার লাভের সম্ভাবনা রয়েছে, তাকে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড দেয়া হতে পারে, জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডই হতে পারে।’
তবে বিচারক কাউকে কারাদণ্ড না দিয়ে একেকজনকে ২০০ থেকে থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করেন। আর জরিমানা পরিশোধ করার পর তাদের সবাইকে ছেড়ে দেয়া হয়।
মুখ্য মহানগর আদালতের (সিএমএম) হাজতখানার ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে তথ্যটি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৬০০জনকে এই জরিমানা করা হয়েছে।’
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বৃহস্পতিবার থেকে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাসার বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে ওই বছরের ২৫ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি এবং গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন নামে বিধিনিষেধ দেয়া হয়। ওই দুই বিধিনিষেধের তুলনায় এবার সরকার যে অনেক বেশি কঠোর, সেটি আগেই বোঝা গিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেনা মোতায়েন করা হবে- এমন তথ্য দিয়ে সরকারের বার্তা ছিল স্পষ্ট। তবে এর মধ্যেও বিভিন্ন এলাকায় মানুষ নানা অজুহাতে বাড়ির বাইরে এসেছে। তবে যারা পুলিশের সামনে পড়েছেন, তারা পার পাননি।
বিধিনিষেধের প্রথম দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫৫০ জনকে আটকের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ। রাতেও ধরা হয় বেশ কয়েকজনকে। এছাড়া জরিমানা করা হয় আরও বহুজনকে।
শাটডাউন না মানাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলা
রাতে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় আটকদেরকে ছাড়িয়ে আনতে স্বজনদের ভিড় দেখা যায় পুলিশ স্টেশনগুলোতে।
বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে বাইরে মানুষের চলাচল আরও কম। তবে এর মধ্যেও অকারণে বাইরে আসায় ৩২০ জনকে আটকের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।