জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে আদায় করা হয়েছে শাটডাউনে প্রথম জুম্মার নামাজ। মসজিদের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানলেও বের হওয়ার সময় তাতে পাত্তা দেননি কেউই।
মসজিদের ভেতরে ছিল খুবই কড়াকড়ি। ওযুখানায় নির্দেশনা অনুযায়ী, রাখা ছিল সাবান। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে একটু পর পর সবুজ চিহ্ন অনুযায়ী দাঁড়াতে হয়েছে মুসল্লিদের।
নামায শেষ হওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি উধাও হতে সময় লাগেনি। মসজিদ থেকে বের হওয়ার জন্য মুসল্লিদের ধাক্কাধাক্কি আর একজনের সঙ্গে আরেকজনের শরীর লাগিয়ে কে কার আগে মসজিদ থেকে বের হবেন দেখা যায় তেমন প্রতিযোগিতা।
দেখে ভাবার উপায় নেই দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় শাটডাউন চলছে। আর সরকার জনগণের চলাচলে দিয়ে রেখেছে কঠোর বিধিনিষেধ।
নামাজের আগে বায়তুল মোকাররমের পশ্চিম দিকের গেট দিয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রেও দেখা যায় একই চিত্র। সামাজিক দূরত্ব মানার তাগিদ ছিল না কারোর মাঝে। মাস্ক পরা নিয়েও দেখা গেছে উদাসীনতা।
বায়তুল মোকাররমে জুম্মার নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা মিজানুর রহমান।
বের হওয়ার সময় ধাক্কাধাক্কি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে পল্টনের বাসিন্দা আকরাম হোসেন বলেন, ‘নামাজ শেষ তাই চলে যেতে হবে। আর সবাই এভাবেই বের হচ্ছে।’
স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মুসল্লিদের স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে খুবই সচেতন। সরকারের পক্ষ থেকে যেভাবে বলা হয়েছে আমরা সেভাবেই তা পরিপালন করছি।
‘বায়তুল মোকাররম মসজিদে যারা খাদেম (সেবক) আছেন তারা এ বিষয়টিকে দেখভাল করেন। জুম্মার নামাজ হওয়ায় মুসল্লি বেশি ছিল। ফলে বের হওয়ার সময় স্বাস্থ্যবিধি যেভাবে মানা উচিত ছিল সেভাবে মানা হয়নি। তবে অন্যান্য সকল নামাজে তা মানা হয়।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার থেকে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের কঠোর, যা অনেকের কাছে পরিচিতি পেয়েছে শাটডাউন নামে।
শাটডাউনে নাগরিকের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে আরোপ করা হয়েছে নানা ধরনের বিধিনিষেধ। এই সময়ে মসজিদে নামাজ আদায় নিয়ে ৯টি নির্দেশনা রয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের।
এতে বলা হয়েছে, কেবল ফরজ নামাজ আদায়ের জন্য আসা যাবে মসজিদে। সুন্নত ও অন্যান্য নামাজ বাসায় পড়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, যেখানে মসজিদে ঢোকার মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে বলা হয়েছে এবং মুসল্লিদের মাস্ক পরে মসজিদে আসা বাধ্যতামূলক।
মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে পুরো মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, মুসল্লিদের প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে।
সংক্রমণ রোধ নিশ্চিত করতে মসজিদের অজুখানায় সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।
করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পেতে নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে খতিব, ইমাম ও মুসল্লিরা দোয়া করবেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।