সরকারঘোষিত শাটডাউনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার।
১ জুলাই রাজধানীর পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, সরকারঘোষিত সাত দিনের শাটডাউন বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও সাধারণ মানুষের মুখে মুখে যেভাবে প্রচার পেয়েছিল, তা পালনে শিথিলতা রয়েছে।
সকাল ১০টার দিকে পুরান ঢাকার হাজারীবাগ থেকে শুরু করে নবাবগঞ্জ, সেকশন, কামরাঙ্গীরচর ঢোকার ব্রিজ, নবাবগঞ্জ কাঁচাবাজার, সাতশহীদ ও গোরাশহীদ মাজার, আজিমপুর, ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজার, পলাশী বাজার, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, বকশীবাজার, হোসেনী দালান, নাজিমউদ্দীন রোড, পঞ্চায়েতের মোড়, পোস্তা, লালবাগ কেল্লার মোড়, ইসলামবাগ, শহীদনগর, লালবাগ থানার মোড়, চকবাজার মডেল থানা ও পুরোনো জেলখানার আশপাশের এলাকা, শায়েস্তাগঞ্জ, সোয়ারীঘাট, চকবাজার, উর্দু রোড, আগা সাদেক লেন, মলিবাজার, ইমামগঞ্জ, লালবাগ মিটফোর্ড রোড, বাবুবাজার পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা, ইসলামপুর চালের আড়ত, ফল মার্কেট, ইসলামপুর কাপড়ের মার্কেট, বাংলাবাজার, তাঁতীবাজার, বংশাল, ধোলাইখালসহ সদরঘাটের আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খাবার হোটেলগুলো অনেকটা আগের মতোই চলছে।
হোটেল মালিক-কর্মচারীদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই।
তবে কোনো পুলিশ সদস্যদের আসতে দেখলে দ্রুত তারা মাস্ক খোঁজাখুঁজিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন।
খাবার হোটেলগুলোতে খরিদ্দারদের টেবিলে বসিয়ে খেতে দেয়ার বিষয়ে বারণ থাকলেও তারা তা সঠিকভাবে পালন করছেন না।
কারণ হিসেবে লালবাগ কেল্লার মোড়ে খাবার হোটেলের মালিক খাজা নেওয়াজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মহল্লার পোলাপাইন মানা করলেও শোনে না। পরে তারা তো গ্যাঞ্জাম লাগাইয়া দিব।’
তখন থানা-পুলিশ করতে গেলে বলব, ‘শালার বেটা দোকান খুলছে কেন? শাটডাউন দিছে সরকারে ব্যাটায় জানে না। তখন উল্টা আমাগো ফাঁসাইবো পুলিশে।’
মাস্ক ব্যবহার ঠিকমতো করছেন না কেন—এমন এক প্রশ্নের জবাবে চকবাজারের আমানিয়া বেকারির মালিক বলেন, ‘মাস্ক পরতাছি তো, তবে মাঝেমধ্যে দম লইবার পারতাছি না, তাই তো খুইলা খুইলা পরতাছি।’
মাংসের দোকানগুলোতে দেখা যায় অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই।
লালবাগ রোডের কয়েকজন ফুটপাতের ওপর ঝুড়িতে বা চট বিছিয়ে কাঁচা তরকারি বিক্রেতা বা ভ্যানের ওপর আম, কাঁঠাল বা শাকসবজির বিক্রেতার মুখে কোনো মাস্ক নেই। আবার অনেক ক্রেতারও একই অবস্থা।
সেকশন (নবাবগঞ্জ) পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ও ঢালে ব্যারিকেড দিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্য কিছু পথচারীকে থামিয়ে তার বের হওয়ার প্রয়োজনের কথা জিজ্ঞেস করছেন। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাকে কিছুক্ষণ বসিয়ে রাখছেন, এরপর ফিরিয়ে দিচ্ছেন।
লালবাগ থানার সামনে, সোয়ারীঘাট পুলিশ চেকপোস্ট, বাবুবাজার ব্রিজের নিচে, ইসলামপুর কাপড়ের মার্কেট, বাংলাবাজারের মোড়, বাহাদুরশাহ পার্ক এলাকা রায় সাহেব বাজার মোড়সহ আশপাশের এলাকায় প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্পসংখ্যক পুলিশ সদস্যকে শাটডাউন কার্যকর কারার জন্য অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
বৃষ্টি নামার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা নিজেরাই দোকানপাট খোঁজ করেন বসার জন্য।
এদিকে শাটডাউন কার্যকর করতে বিজিবি ও সেনাবাহিনীর মাঠে নামার কথা থাকলেও পুরান ঢাকার উল্লিখিত এলাকায় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাদের কোনো টহল বা গাড়ি দেখা যায়নি।