মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারে বুধবার সকালে প্রবেশ করতেই শোনা গেলো মাংসদোকানীদের হাঁকডাক।
মাংস বিক্রেতা মো. পারভেজ জানালেন, বাজারে কাস্টমার কম। তাই হাঁকডাকে অনেকটা পাল্লা চলছে দোকানীদের।
পারভেজ বলেন, ‘রোরবার থেকে মঙ্গলবার এই ৩ দিনে অনেকেই বাজার কইরা ফেলছে। হ্যার লাইগ্যা বাজারে কাস্টমার এখন কম।’
একই কথা জানান, মাংস বিক্রেতা মো. আরমানও।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গেল- বাজারে গরুর মাংস তারা বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। বিক্রেতারা ৫৫০ টাকা করে দাম হাঁকালেও একটু দামাদামি করলে ৫০০ টাকায় কেনা যাচ্ছে।
মাংস বিক্রেতা মুন্না মিয়া জানালেন, গরুর মাংসের দাম এখন একটু বেশিই হবে।
কারণ কী জানতে চাইলে বলেন, ‘এখন অনেকের ফার্মে গরু নাই। থাকলেও সামনে ঈদে বিক্রি করবেন বলে ছাড়ছেন না বাজারে। তাই গরুর মাংসের দাম কিছুটা বেশি।’
মাংস বিক্রেতা পারভেজ জানান, ‘গত ৩ দিন আগে ৬০০ টাকায় প্রতি কেজি মাংস বিক্রি করছি। কিন্তু এখন দিতাছি ৫২০ থেকে ৫৫০ টাকায়। কারণ কাস্টমার কম।’
রাজধানীর টাউন হল কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ওই বাজারের মাংস বিক্রেতা সাব্বির খান বলেন, ‘কাস্টমার একটু কমই।’
এক সপ্তাহের শাটডাউনের আগে বাজারে ক্রেতা কম। ছবি: নিউজবাংলা
ওই বাজারে খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান মাংস বিক্রেতা খুরশিদ আলম।
লকডাউনের আগে মাছের দাম কিছুটা বাড়তি বলে জানান মাছ বিক্রেতারা। মাছ বিক্রেতা মো. কাজল জানান, ‘এখন মাছের দাম একটু বেশিই। কারণ আমদানি আগের মতো নাই।’
তিনি প্রতি কেজি বোয়াল মাছ বিক্রি করছেন ৫০০ টাকায়। ওই বাজারে প্রতি কেজি পাঙ্গাস মানভেদে ১৩০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া রুই প্রতি কেজি ৩৩০ ও কাতলা ৩০০, চিংড়ি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর শেখেরটেকে থাকেন মঞ্জুর হাসান। তিনি মাছ কিনতে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারে যান। মাছের দাম অন্য সময়ের মতই বলে জানান তিনি।
‘লকডাউনের কারণে দাম খুব বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে না।’
মাছ বিক্রেতা মহসিন জানালেন, ‘মাছের দাম একটু বেশিই। কারণ মাছ এখন আগের মত বাজারে আসছে না।’
বিভিন্ন ধরনের মুরগি বিক্রি করছেন ব্রয়লার হাউস নামের এক দোকানমালিক মো. শাহিন। তিনি বলেন, ‘ডিমের দাম একটু কমেছে। আগে প্রতি ডজনের দাম ছিল ১০৫ টাকা, কিন্তু এখন ১০০ টাকায় বিক্রি করছি’।
ওই বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, সোনালী ২২০ টাকায়।
মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজারেও ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. ফয়সাল জানান, দেশি মুরগি ৫৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন তিনি।
কাঁচাবাজারে সবজির দাম কিছুটা চড়া এখন। ওই বাজারে সবজির মধ্যে লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঢেড়স ৫০ টাকা, বেগুন প্রকার ভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, প্রতিকেজি কাঁচামরিচ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আব্দুল খালেক বলেন, ‘কাস্টমার তো ছিল আগের ৩ দিন। তয় আগের গত বছরের লকডাউনে এর চেয়ে বেশি কাস্টমার হইছিল।’
টাউন হল কাঁচাবাজারে সবজি বিক্রেতা দুদু মিয়া জানালেন, তিনি প্রতি কেজি বেগুন ৭০ টাকা, শসা ৮০ টাকায় বিক্রি করছেন। ওই বাজারে প্রতি হালি লেবু ২০ টাকায়, প্রতি কেজি পটল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজ বিক্রেতা জাকির হোসেন জানান, গত কয়েক দিনে ৫ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত পেয়াজ কিনে নিয়ে গেছেন অনেকেই। এখন ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ছিল ৪০ টাকা।
ওই দোকানে প্রতি কেজি দেশি আদা ১৩০ টাকা, চীনা আদা ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি বিদেশি রসুন ১৩০ টাকা ও দেশি রসুন ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারের কে এইচ ট্রেডার্সের মালিক মোক্তার হোসেন। তিনি জানালেন গত এক সপ্তাহে সয়াবিন তেলের দাম বাড়েনি। এখন প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম ১৫০ টাকা।