করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউনে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। এর মধ্যেই চলছে সরকারি-বেসরকারি অফিসের কার্যক্রম। এ সময়ে কর্মীদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আনা-নেয়ার কথা বলা হলেও অধিকাংশ অফিস কর্তৃপক্ষ তা করেনি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ।
কর্মস্থলে যেতে তাদের কেউ কেউ হেঁটেছেন, কেউ কেউ রিকশা বা সিএনজিচালিত অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করেছেন। আবার অনেকে শেয়ারে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে চড়ে অফিস গেছেন।
সড়কে গণপরিবহন না থাকলেও ব্যক্তিগত যান ও রিকশার কারণে নগরীর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে।
লকডাউনে অফিসগামীদের ভোগান্তির চিত্র দেখেছেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক।
রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন মোড়ে দাঁড়িয়ে যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন একটি বেসরকারি অফিসের কর্মী আজহার।
তিনি বলেন, ‘সব চালু রেখে সরকার বাস বন্ধ করে দিছে। অফিসগুলোরে বলছে, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তার কর্মীদের আনা-নেয়া করতে। অফিস তা করল না। করছে কী করছে না, তাও দেখছে না সরকার। আমাদের কথা না ভেবেছে সরকার, না অফিস।’
প্রায় আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো ব্যবস্থা না হওয়ায় আজহার একটি মাইক্রোবাসে অন্যদের সঙ্গে উঠে বসেন। তিনি যাবেন ধানমন্ডি। কিন্তু এই মাইক্রোবাস যাবে এফডিসি রেলক্রসিং পর্যন্ত। বাকি রাস্তাটুকু হেঁটে বা রিকশায় যেতে হবে আজহারকে।
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রিকশা ভাড়া বেড়েছে কয়েক গুণ। গত সোমবার থেকে লাগামহীন ভাড়া মেনে নিয়েই চলতে হচ্ছে নগরবাসীকে। আর যারা বাড়তি ভাড়া গুনতে চাইছেন না, তাদের সঙ্গে রিকশাচালকদের ঝগড়া বাঁধছে নিয়মিত।
মগবাজার মোড়েই এক রিকশাচালকের সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যায় একজনকে। এগিয়ে গিয়ে কারণ জিজ্ঞেস করতেই রিকশাচালক বলেন, ‘খালি কী আমি বেশি ভাড়া নিতাছি? হগলেই এমন। দেহেন এর কমে কেউ যায় কি না।’
রিকশাচালকের পাশে থাকা মনির নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘যাব পল্টন। ভাড়া চাইতাছে দেড় শ। ক্যাম্নে, বলেন? সুযোগ পাইয়া সবাই গলা কাটতেছে।’
গণপরিবহন বন্ধের মধ্যেও চলছে ওয়াটার ট্যাক্সি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীসহ সারা দেশে বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও হাতিরঝিলে চালু রয়েছে ওয়াটার ট্যাক্সি। সবগুলো সিটেই যাত্রী নিয়ে চলছে ওয়াটার ট্যাক্সিগুলো।
বুধবার সকালে দেখা যায়, হাতিরঝিলের রামপুরা ঘাটের সামনে কয়েক শ মানুষ লাইন ধরে অপেক্ষা করছে। একের পর এক ট্যাক্সি আসছে আর যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে।
ভাড়া বাড়েনি। তাই যাত্রীও অর্ধেক নেয়া হচ্ছে না বলে জানান টিকিট মাস্টার। ওই সময় নিজের নাম বলতে চাননি তিনি।
তার ভাষ্য, ‘আমাদের কেউ বলেনি যে, ট্যাক্সি চালানো যাবে না। তাই চলছে। আপনার কিছু জানার থাকলে হাতিরঝিল প্রকল্পের পরিচালকের কাছে যান।’
ওয়াটার ট্যাক্সির পরিচালনায় আছে করিম গ্রুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচল নিয়ে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচলের বিষয়ে তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা এটা বন্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’