দেশে কিশোর অপরাধ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
র্যাবের ডিজি কিশোর গ্যাং প্রসঙ্গে বলেন, ‘বর্তমান সময়ে কিশোর অপরাধ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। তারা হত্যাকাণ্ডের মতো হিংস্র ও নৃশংস অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে।’
‘পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করতে এখনই কিশোর গ্যাং কালচারের লাগাম টানা দরকার। র্যাব কিশোর গ্যাং নামক অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান পরিচালনা করছে। আমরা প্রত্যাশা করি, মা-বাবা তাদের সন্তানের প্রতি আরও নজর দেবেন; পাশাপাশি সমাজ ও শিক্ষাঙ্গনকে এগিয়ে আসতে হবে। যারা কিশোরদের গ্যাংয়ে রূপান্তর করছে অর্থাৎ পৃষ্ঠপোষক; তাদের ছাড় দেয়া হবে না।’
ভেজাল পণ্য, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালাচ্ছে জানিয়ে র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, ‘করোনা অতিমারির এ সময়ে লকডাউন নিশ্চিত করার পাশাপাশি র্যাব ভেজাল পণ্য, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে র্যাব।’
‘এ ছাড়া এক বছরের বেশি সময় ধরে আমরা মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, অবৈধ কিট, ভুয়া রিপোর্ট ইত্যাদি সম্পর্কীয় অভিযান পরিচালনা করেছি। সাম্প্রতিক সময়ে করোনাসহ বিভিন্ন রোগের টেস্টিং কিট ও রি-এজেন্ট জব্দ ও প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ ৯ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এভাবে র্যাব করোনার সময়ে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা এবং লকডাউন নিশ্চিত ও মানসম্মত করোনা সুরক্ষাসামগ্রী প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে কাজ করে যাচ্ছে।’
র্যাবে ৪৭ পুলিশ সুপারের পোস্টিংয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটছে। এই ক্ষেত্রে র্যাবের বিশেষ কোনো করণীয় আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অপরাধ কর্মকাণ্ড যেন না করতে পারে সে জন্য কিন্তু অভ্যন্তরীণভাবে আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছি। সাইবার ওয়ার্ল্ড পেট্রোলিংয়ের জন্য আমাদের যে সক্ষমতা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন তা আমরা নিয়ে চলছি। তাদের কার্যক্রমের ওপর আমাদের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। আগামীতে নিত্যনতুন কোনো প্রযুক্তি এলে সেটির সঙ্গে আমরা তাল মিলিয়ে কাজ করব।’
সাগর-রুনি হত্যা মামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে র্যাবের ডিজি বলেন, ‘আপনারা জানেন মামলাটি আমাদের কাছে তদন্তাধীন রয়েছে। যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটি আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষ হলে আমরা আদালতে যথাযথ প্রতিবেদন পেশ করব।’
মামলাটির তদন্ত করতে এত সময় লাগছে, এ ধরনের মামলার ক্ষেত্রে কি র্যাবের সক্ষমতা কম—এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাবের ডিজি বলেন, ‘র্যাবের সক্ষমতা কম এ কথা আমি বলব না। সব মামলার ক্ষেত্রে যে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ডিটেক্ট করতে পেরেছি এটা কিন্তু না। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত করে যাচ্ছি। এর থেকে বেশি সময় নিয়েও অনেক মামলা বিভিন্ন সংস্থার কাছে তদন্তাধীন রয়েছে।’