যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ তৈরির অভিযোগে রাজধানী থেকে পাঁচজনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান অঞ্চলের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
সোমবার বেলা দেড়টার দিকে হাতিরপুল, রামপুরা ও মালিবাগ এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটক পাঁচজন হলেন লুবনা আক্তার, আনোয়ার কাজী, রামচন্দ্র বসাক, এসএম তাজমুল তারিক ও কনক কুমার শাহা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম।
তিনি জানান, রাজধানীতেই আমেরিকা-চায়না ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ তৈরি হচ্ছে-এমন তথ্য পেয়ে হাতিরপুল, রামপুরা ও মালিবাগে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ভেজাল ওষুধও জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, নারায়ণগঞ্জের জালকুড়িতে আয়ুর্বেদিক দাওয়াইখানায় তৈরি অনুমোদনহীন বিভিন্ন ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল কেজি দরে অথবা হাজার পিস হিসেবে কিনে এনে এসব কারখানায় ইচ্ছামতো ট্রেড নেম দেয়া হতো। পরে সেগুলো যুক্তরাষ্ট্র অথবা চীন থেকে ইমপোর্ট করা হার্ট, লিভার, হাড় এবং বেশির ভাগ সময় যৌনরোগের ওষুধ হিসেবে চালানো হতো।
আটক ব্যক্তিরা প্রথমে রাজধানীর চকবাজার ও মিডফোর্ড এলাকা থেকে বিভিন্ন রঙের প্লাস্টিকের বোতল, সিপি, সিলিকন সংগ্রহ করত। পরে হাতিরপুল, নীলক্ষেত, ফকিরাপুল ও মালিবাগের বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকান থেকে বিভিন্ন হলোগ্রাম ও মনোগ্রাম-সংবলিত ঝকঝকে রঙিন স্টিকার ও লেবেল তৈরি করে তাতে লাগানো হতো।
ওই লেবেলে অ্যালেক্স ইন্টারন্যাশনাল, রেমেডি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, অর্গানন হেলথ কেয়ার, সান করপোরেশনের মতো বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির নাম থাকত। এসব নকল ওষুধ কলেজপড়ুয়া মেয়েদের দিয়ে গুলশান, বনানী, কাকরাইল, ধানমন্ডি, উত্তরা ও মিরপুরের বিভিন্ন নামিদামি এবং পরিচিত ওষুধের দোকানে বিদেশি ওষুধ হিসেবে বিক্রি করা হতো।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু চিকিৎসক উপহার ও কমিশনের লোভে এসব ভেজাল ওষুধ রোগীদের ব্যবস্থাপত্র হিসেবে দিতেন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
পাইকারদের মাধ্যমে একটি সিন্ডিকেট চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কক্সবাজার, মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়ও বিক্রি করা হতো।