মগবাজার বিস্ফোরণের ঘটনা জানার পর বন্ধু সহকর্মী এবং বড় বোনের জামাই সারা রাত রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল এবং থানায় রুহুল আমিন নোমানকে খুঁজেছেন। কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। সকালে মিলল মরদেহ।
মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকার আড়ংয়ের শোরুম ও রাশমনো হাসপাতালের উল্টো দিকের মূল সড়ক লাগোয়া একটি ভবনে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিস্ফোরণ হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৩২ বছর বয়সী নোমান একজন।
বিস্ফোরণের প্রায় এক ঘণ্টা পর নোমানকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে সহকর্মী মিজান ফোনে নোমানের বোন জামাই আইনজীবী মাহফুজুর রহমানকে জানান।
রাতেই নোমানের খোঁজে বের হন তার আত্মীয় স্বজনেরা। কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সোমবার সকাল ৯টার দিকে রমনা থানা থেকে ফোন করে জানানো হয় মগবাজার বিস্ফোরণে যে ৬ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে একজন নোমান হতে পারে।
মরদেহ শনাক্ত করার পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গের সামনে অপেক্ষা করছিলেন মাহফুজুর রহমান। বাকরুদ্ধ তিনি। শ্যালকের মরদেহ শনাক্ত করেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত পরিবারের কাউকেই জানাননি মাহফুজুর।
পরে নোমানের বন্ধু এবং সহকর্মীদের পরামর্শে পরিবারের সদস্যদেরকে বিষয়টি জানানো হয়।
রোববার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ছেলের খোঁজ পেতে অপেক্ষা করছিলেন নোমানের অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক বাবা-মা। নোমান ছিলেন তাদের একমাত্র ছেলে।
স্ত্রী নাবিলা ও তিন বছরের একমাত্র কন্যা নূহাকে নিয়ে নোমান থাকতেন রাজধানীর শাহজাহানপুরে।
নোমানের মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েছেন তার সহকর্মী ও স্বজনেরা। ছবি: নিউজবাংলা
বোন জামাই মাহফুজুর রহমান জানান, নোমান অ্যান্ড রহমান অ্যাসোসিয়েটে অ্যাক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করতেন। দাপ্তরিক কাজে যাত্রাবাড়ী গিয়েছিলেন, সেখান থেকে মগবাজারে অফিসে ফেরার পথে বাসে অথবা ফুটপাতে ছিলেন তিনি।
ইউডার ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৩ ব্যাচ থেকে বিএসসি শেষ করেন নোমান। তার মৃত্যুতে শোকাহত তার বন্ধু সহকর্মীরা।
সহকর্মী তৌশিকুল ইসলাম বলেন, ‘নোমান খুব বিনয়ী ছিল। তার মেয়েকে কী বলব আমরা।’
মগবাজার বিস্ফোরণে মৃত অন্যরা হলেন স্বপন, আবুল কাশেম, রেডিও ধ্বনির কর্মি মোস্তফিজুর রহমান, জান্নাত ও তার মেয়ে তাইয়েবা।