রাজধানীর মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ নিয়ে জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর কাছে বিবৃতি চেয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।
জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে সোমবার অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি করেন।
চুন্নু বলেন, ‘দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, গত রাতে মগবাজারে মনে হয় সিলিন্ডার (পত্রিকার ভাষ্য অনুযায়ী) বিস্ফোরিত হয়ে শিশুসহ প্রায় ৭ জন (৬ জন) লোক মারা যায়। আরও অনেকেই গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।’
‘যাদের কারণে এই দুর্ঘটনা হলো, যে হোটেল বা রেস্তোরাঁর কারণে, তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য বাধ্য করা হবে কি না, এই বিষয়ে একটি বিবৃতি যাতে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী দেন, সেই দাবি রাখছি।’
মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকার আড়ংয়ের শোরুম ও রাশমনো হাসপাতালের উল্টো দিকের মূল সড়ক লাগোয়া একটি ভবনে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিস্ফোরণ হয়। এতে মৃত্যু হয় ৬ জনের। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে অনেকের।
বিস্ফোরণের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণে এখনও জানাতে পারছে না ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যদিও বিস্ফোরণের রাতে পুলিশ থেকে বলা হয়েছিল জমে থাকা গ্যাসে এই বিস্ফোরণের কারণ হয়ে থাকতে পারে।
চুন্নু জানান, ঢাকা শহরে যে সমস্ত হোটেল-রেস্তোরাঁ আছে, এইগুলোতে যে গ্যাস ব্যবহৃত হয়, গ্যাসের যে সিলিন্ডার বা স্টোভ আছে, এগুলো কখনও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিদর্শনের মাধ্যমে ইন্সপেকশন করা হয় কি না এই প্রশ্ন এবার সামনে আসছে। কারণ, আমরা এর আগেও দেখেছি বিভিন্ন প্রাইভেট গাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হওয়ার কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমি জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ করব গতরাতে যে ঘটনাটা ঘটল, এটা আসলেই যদি গ্যাসের কারণে হয়ে থাকে...এইখানে যে গ্যাসের এতবড় একটা স্টোর ছিল এটা কী অবস্থায় ছিল? সারা দেশে যে সমস্ত জায়গায় গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহৃত হয় বা যেখানে মজুদ করা হয় সেগুলোতে প্রয়োজনীয় ইন্সপেকশন হয় কি না, যদি না হয় তাহলে এটা যাতে করা হয়।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ বলেন, গত বছরে নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে অনেক মানুষ মারা গিয়েছিলেন। অনেক মানুষ আহত হয়েছিলেন, যাদের দীর্ঘদিন চিকিৎসা দিতে হয়েছিল। গতকাল মগবাজারের মতো ব্যস্ততম জায়গায় যে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।
এই সংসদ সদস্য জানান, গতকালের ঘটনায় অনেকগুলো বাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এই ক্ষতির দায় কার? কে নেবে এর দায়?
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই এই বিভাগকে কঠোরভাবে নির্দেশ দিতে হবে। যারা বেআইনি গ্যাস সংযোগ নিচ্ছে, যারা বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগ নিচ্ছে... এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে প্রতিনিয়ত এইভাবে মানুষ মরবে।