প্রস্তাবিত ১০টি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়ন না করার সরকারি সিদ্ধান্তকে সতর্ক সাধুবাদ জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন আন্তর্জাতিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
শনিবার এক সংবাদ বিবৃতিতে এ কথা জানায় সংস্থাটি।
এ নিয়ে সরকারকে দ্বিতীয়বারের মতো এই সতর্ক সাধুবাদ জানিয়েছে টিআইবি। এর আগে গত ৩ জুন বাজেট প্রস্তাব করার পর কালোটাকা বৈধ করার বিষয়ে কোনো বক্তব্য না থাকায় প্রথমবারের মতো ধন্যবাদ জানায় সংস্থাটি। যদিও পরে গণমাধ্যমে সংবাদ আসে যে, কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ আসলে থাকছে।
টিআইবির বিবৃতিতে কয়লাবিদ্যুৎকে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগের সিদ্ধান্তেও উদ্ধেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এ খাতে আরও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে তারা।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পরিবেশবাদীদের ক্রমাগত উদ্বেগ এবং স্থানীয় জনগণের তীব্র আপত্তি ও প্রতিবাদ সত্ত্বেও পরিবেশগত প্রতিপন্ন এলাকা এবং জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় জেলায় সরকার বড়সংখ্যক কয়লাভিত্তিক প্রকল্প স্থাপনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা থেকে ১০টি কয়লাভিত্তিক প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্ত সরকারের বোধোদয় হিসেবে ধরে নেয়া যেতে পারে।’
৯ হাজার ৩৪৭ মোগাওয়াটের এই ১০টি প্রকল্প বাতিল হলেও আরও ১৯টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়ে গেছে। এর মধ্যে রামপাল, মাতারবাড়ী, মিরসরাইসহ আটটি কেন্দ্র বাস্তবায়নাধীন। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ সরকার ১০ থেকে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এসব কেন্দ্র থেকে পেতে চায়।
সংশোধিত বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনায় কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে পুরোপুরি সরে আসার সুনির্দিষ্ট ঘোষণাও প্রত্যাশা করা হয় বিবৃতিতে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এটা খুবই উদ্বেগের যে, লক্ষ্যমাত্রার প্রায় চারভাগের এক ভাগ বিদ্যুৎ সরকার কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকেই পেতে চাইছে। আবার বাতিলকৃত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবর্তে ব্যয়বহুল এলএনজি এবং জ্বালানি তেলনির্ভর কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। যেটি বাংলাদেশকে ২০৩০ সলের মধ্যে এশিয়ার অন্যতম কয়লা ও কার্বন দূষণকারী দেশে রূপান্তরিত করবে, যা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সরকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিধায় কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।’