করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামী সোমবার থেকে সারা দেশে শুরু হচ্ছে এক সপ্তাহের কঠোর শাটডাউন। এতে অনেক মুষড়ে পড়েছেন ঢাকার সদরঘাটের নৌ-শ্রমিকরা।
চলমান বিধিনিষেধের কারণে গত কয়েক দিনের মতো শনিবারও সেখান থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। এর মধ্যে শাটডাউনের খবরে চিন্তার ভাঁজ লঞ্চশ্রমিকদের কপালে। অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা।
সদরঘাটের লঞ্চঘাটের প্রতিটি প্রবেশমুখের সব কয়টি গেট আটকানো। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না লঞ্চ টার্মিনালে। পুরো টার্মিনাল ফাঁকা। নেই কোনো হকারের হাঁকডাক।
সরকারের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার শুক্রবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, করোনার সংক্রমণ রোধে আগামী সোমবার থেকে সারা দেশে সাত দিনের কঠোর লকডাউন থাকবে। সরকার থেকে কঠোর লকডাউন বা বিধিনিষেধ বলা হলেও সব মহলে এটি পরিচিতি পেয়েছে ‘শাটডাউন’ নামে।
শাটডাউনের খবরে লঞ্চের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পড়েছেন বড় দুশ্চিন্তায়। লঞ্চ না ভাসলে যে থেমে যাবে তাদের সংসারের চাকা। তিনবেলা খাবার নিশ্চিত করা হয়ে উঠবে অনিশ্চিত।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন নিউজবাংলাকে জানান, ২১ তারিখ থেকে (সাত জেলায়) দেয়া লকডাউনের কারণে এমনিতেই বন্ধ রয়েছে নৌচলাচল এবং এর সঙ্গে সোমবার থেকে দেয়া লকডাউনের কারণেও বন্ধ থাকবে সব ধরনের নৌচলাচল।
সুরভী-৯ লঞ্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সুমন নামে একজন শ্রমিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার লকডাউন দিছে, তাই এসব বন্ধ। সন্তানদের মুখে খাবার কেমনে দিমু আল্লাহ জানে। আল্লাহ রহম করা ছাড়া বাঁচার উপায় নেই।’
সুন্দরবন-১০ লঞ্চের কর্মচারী আনিস বলেন, ‘এভাবে বারবার লকডাউন দিলে আমাদের খুব সমস্যায় পড়তে হয়। কী করব, কী খাব? সংসার কীভাবে চালাব আল্লাহ ভালো জানেন।’
ঢাকায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২১ জুন মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ জেলায় লকডাউন দেয়া হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধ রয়েছে ঢাকা-মাদারীপুর, ঢাকা-মিরকাদিম/মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ/চাঁদপুর/নড়িয়া, শিমুলিয়া (মুন্সিগঞ্জ)-বাংলাবাজার (মাদারীপুর)/মাঝিকান্দি (শরীয়তপুর), আরিচা (মানিকগঞ্জ) কাজিরহাট, পাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ)-দৌলতদিয়া (রাজবাড়ী) রুটসহ সব রুটে নৌচলাচল।